ইউজিসি চেয়ারম্যান নিয়োগের পর এবার আলোচনায় সদস্য পদ

ছবিতে বাম থেকে অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন
ছবিতে বাম থেকে অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন  © ফাইল ছবি

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তিন সদস্যের মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুনে। সম্প্রতি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগের পর এবার আলোচনা শুরু হয়েছে এ তিনটি পদকে ঘিরে। সূত্রগুলো বলছে, মেয়াদ পূর্ণ করা সদস্যদের কেউ কেউ দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেতে জোর তদবির চালাচ্ছেন। আবার কমিশনে আসতে নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রাক্তন উপাচার্য ও প্রভাবশালী অধ্যাপকরাও। 
 
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ জুন কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্টের সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম এবং অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের মেয়াদ শেষ হবে। আর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৫ জুন। 

তথ্যমতে, ২০১৯ সালের জুন মাসে ইউজিসি সদস্যের দায়িত্ব পান বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন। এই তিনজনের মধ্যে দ্বিতীয় মেয়াদে ইউজিসির দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসির একটি সূত্র জানিয়েছে, কমিশনের সদস্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনকে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজার জায়গায় নতুন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। তৃতীয় মেয়াদে তাকে ইউজিসির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ইউজিসির সদস্য হতে ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন অনেকে। এদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী তিন অধ্যাপক। এ ছড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন অধ্যাপকও তাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। তবে ঢাবি, জাবি এবং বাকৃবির ওই তিন অধ্যাপকের যেকোনো একজনকে ইউজিসির সদস্য নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউজিসির এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, জুনের মাঝামাঝি আমাদের তিনজন সদস্যের মেয়াদ শেষ হবে। এ তিনজনের মধ্যে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। তবে অধ্যাপক দিল আফরোজা নতুন করে দায়িত্ব পাচ্ছেন না বলে জেনেছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের সদস্য পদে নিয়োগ পেতে আগ্রহী শিক্ষকরা তাদের জীবনবৃত্তান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জমা দেন। প্রাপ্ত জীবনবৃত্তান্তগুলো প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করে একটি শর্ট লিস্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী সেই তালিকা যাচাই-বাছাই, গোয়েন্দা প্রতিবেদন, শিক্ষকতা জীবনে তিনি কোন মতাদর্শের ছিলেন, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, সততা— এসব বিষয় যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ে পাঠান। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর আবার তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবু ইউসুফ মিয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইউজিসিতে সদস্য নিয়োগের বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী দেখেন। নতুন সদস্য কারা হবেন, নাকি পুরোনো সদস্যদের নতুন করে দায়িত্ব দেওয়া হবে সে বিষয়ে আমরা এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি।


সর্বশেষ সংবাদ