এআই ব্যবহারে আপনার মস্তিষ্ক বিকল হচ্ছে না তো?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৮ AM , আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০৩:১২ PM
কল্পবিজ্ঞান নয়, বাস্তবেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন আমাদের চিন্তা, কাজ এমনকি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করছে। অফিসের টাস্ক ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীদের এসাইনমেন্ট লেখা, এমনকি ব্যক্তিগত জীবনেও এআই এখন সঙ্গী। তবে প্রযুক্তি ব্যবহার যতই বাড়ছে, ততই উদ্বেগ বাড়াচ্ছেন গবেষকরা— এমন ব্যবহার কি মানুষের নিজস্ব চিন্তাশক্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে?
সম্প্রতি একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে, অতিরিক্ত এআই নির্ভরতা মানুষের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা, বিশ্লেষণী চিন্তা ও মস্তিষ্কের সৃজনশীলতা হ্রাস করতে পারে। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করেন, তারা অনেক সময়েই সহজ সিদ্ধান্ত গ্রহণেও দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন। কারণ, তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে যেকোনো সমস্যার সমাধান বাইরে থেকে পাওয়ার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন মস্তিষ্ককে যথাযথ অনুশীলনে না রাখলে চিন্তার পেশি (কগনিটিভ মাসল) দুর্বল হয়ে যায়। যেমনটা হয় শরীরচর্চা বন্ধ রাখলে পেশি শুকিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে। এআই যতটাই দক্ষ হোক না কেন, মানুষ যদি সব দায়িত্ব মেশিনের কাঁধে তুলে দেয়, তাহলে ধীরে ধীরে তার নিজের বিশ্লেষণী ক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে।
তবে সবাই যে এক মত তা নয়। অনেকে মনে করছেন, এআই শুধু একটি টুল— যেভাবে আগে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে গণনা করা হতো, এখন এআই ব্যবহার করে আইডিয়া বের করা হয়। ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করে সে টুলটি কীভাবে ব্যবহার করছে। একজন এটিকে চিন্তার সহায়ক বানাতে পারে, আবার আরেকজন এটিকে চিন্তার বিকল্প বানিয়ে বসতে পারে।
সাবধানবার্তা দিচ্ছেন মনোবিজ্ঞানীরাও। অতিরিক্ত এআই ব্যবহার থেকে তৈরি হতে পারে ‘বুদ্ধিবৃত্তিক অলসতা (cognitive laziness)’। ফলে দীর্ঘমেয়াদে সিদ্ধান্তহীনতা, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি এবং সমস্যা সমাধানে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
তাই, এআই ব্যবহার করবেন ঠিকই, তবে নিজের চিন্তার জায়গাটা যেন মেশিনের নয়, নিজের দখলে থাকে—সেই বোধটুকু থাকা জরুরি। নইলে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতেই পারে: “এআই তো ঠিক আছে, আপনি নিজে কোথায়?’