অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য ইউটিউব নিষিদ্ধ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১২:৪১ PM , আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৫:১৫ PM
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী কিশোরদের জন্য ইউটিউব ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির সরকার। শিশুদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর যেসব কড়াকড়ি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, এবার তার আওতায় আনলো ইউটিউবকেও।
এর আগে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং স্ন্যাপচ্যাট কিশোরদের জন্য নিষিদ্ধ করা হলেও ইউটিউব ছিল বাইরে। তবে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুপারিশে সেটিকেও তালিকাভুক্ত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, ‘আমি সময়ের ডাক দিচ্ছি—অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের নিরাপত্তাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। অভিভাবকদের পাশে থেকে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো কিশোরদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা বুঝে কাজ করতে হবে।’
এক সরকারি জরিপে দেখা যায়, ইউটিউব ব্যবহারকারী কিশোরদের ৩৭ শতাংশই সেখানে ক্ষতিকর কনটেন্টের মুখোমুখি হচ্ছে—যা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় বেশি।
ইউটিউব যদিও নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া হিসেবে না মেনে “ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম” বলে দাবি করছে, যেখানে তারা মূলত শিক্ষা ও বিনোদনমূলক কনটেন্ট সরবরাহ করে থাকে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউটিউবেও সোশ্যাল মিডিয়ার মতোই কনটেন্ট রিকমেন্ডেশন অ্যালগরিদম রয়েছে যা কিশোরদের আসক্ত করে তোলে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১৬ বছরের কম বয়সীরা নিজেরা ইউটিউব অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না। তবে অভিভাবক বা শিক্ষকরা প্রয়োজনীয় ভিডিও দেখাতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষক সংগঠনগুলোও সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
অন্যদিকে, আইনি বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ইউটিউবের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গুগল এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। কারণ, এর আগেও অস্ট্রেলিয়ায় সংবাদ কনটেন্ট নিয়ে সরকারের সঙ্গে গুগলের বড় ধরনের বিরোধ হয়েছিল।
তবে অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী অনিকা ওয়েলস জানিয়েছেন, “শিশুদের কল্যাণে নেওয়া উদ্যোগে আইনি চাপ দিয়ে সরকারকে পিছিয়ে নেওয়া যাবে না।”
নতুন আইনের আওতায় কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিশোরদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে তাদের সর্বোচ্চ ৪৯.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।
বর্তমানে সরকারের একটি টিম বয়স যাচাই প্রযুক্তির কার্যকারিতা পর্যালোচনা করছে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী খুব শিগগিরই চূড়ান্ত আইন কার্যকর হতে পারে।