বিমানে ফোন ‘ফ্লাইট মোডে’ রাখতে বলা হয় কেন?

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

বিমানে উঠলেই যাত্রীদের একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়—মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ফ্লাইট মোডে রাখতে হবে। অনেকেই এটিকে তেমন গুরুত্ব দেয়না। কিন্তু বাস্তবে এই নির্দেশনা বিমানের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্লাইট মোড চালু না থাকলে মোবাইল ফোন থেকে নির্গত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি তরঙ্গ বিমানের নেভিগেশন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে। বিমান পরিচালনায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলো যেমন—কমিউনিকেশন রেডিও, নেভিগেশন ডিভাইস ও অটোমেটেড কন্ট্রোল সিস্টেম—এগুলো অত্যন্ত সংবেদনশীল। একাধিক যাত্রী একসঙ্গে ফোন ব্যবহার করলে এই যন্ত্রগুলো ঠিকভাবে কাজ না করে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখাতে পারে। ফলে পাইলট ভুল নির্দেশনা পেতে পারেন, যা ফ্লাইট নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।

উড়ন্ত অবস্থায় যখন বিমান ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকে, তখন মোবাইল ফোন নিচের একাধিক টাওয়ারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে। এতে মোবাইল নেটওয়ার্কে অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে, যা নিচে থাকা যাত্রীদের সেবা ব্যাহত করতে পারে।

ফোনের তরঙ্গ বিমানের ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেমেও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা শুধু নেভিগেশন নয়, বিমানের স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও বিঘ্নিত করে তুলতে পারে। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

২০১৩ সালের আগে পর্যন্ত ফ্লাইটে ফোন পুরোপুরি বন্ধ রাখার নির্দেশ ছিল। পরে গবেষণায় দেখা যায়, ফ্লাইট মোড চালু রাখলে ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে অনেক কম থাকে। যদিও এখনো অনেক দেশের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এ নিয়ম কঠোরভাবে পালন করে।

এই কারণে, বিমানে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ফোন ফ্লাইট মোডে রাখা শুধু নিয়ম নয়—এটি একটি দায়িত্ব। নিজে নিরাপদ থাকতে এবং অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই নিয়ম মেনে চলা জরুরি।


সর্বশেষ সংবাদ