সমস্যা যখন চুল পড়া, জেনে নিন করণীয়

সমস্যা যখন চুল পড়া, জেনে নিন করণীয়
সমস্যা যখন চুল পড়া, জেনে নিন করণীয়   © সংগৃহীত

চুল পড়ে যাওয়া কিংবা ভেঙে যাওয়ার সমস্যা কমবেশি লেগেই থাকে আমাদের। শক্ত, মজবুত ও ঝলমলে চুল কে-না চায়। চুল মানুষের সৌন্দর্যের প্রতীক। বিভিন্ন কারণে আমাদের চুল ঝরে যায়। তখন ঘটে সৌন্দর্যহানি। তবে পরিবেশ দূষণ ও ধুলাবালিসহ বিভিন্ন কারণে চুলের কাঙ্ক্ষিত মান ধরে রাখা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে।  কিন্তু তার মানে এই নয় যে চুলের উপর আমাদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। নিয়মিত চুলের যত্ন নিলে অবশ্যই চুল মজবুত ও ঝলমলে রাখা সম্ভব।

চুল পড়ার সম্ভাব্য কারণ সমূহ
আমরা জানি যে, ডেইলি ১০০-১৫০টি চুল পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু যখনই অতিরিক্ত চুল পড়ে, চুলের গোছা পাতলা হয়ে যায়, মাথার সামনে টাক পড়তে থাকে- তখনই আমাদের টনক নড়ে।
* চুল পড়া আরম্ভ করলে টেনশন শুরু হয়, আর এতে আরও বেশি চুল ঝরতে থাকে। স্ট্রেস, আনহেলদি লাইফ স্টাইল, রাত জাগা, পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া- এগুলো এক্সেস হেয়ার ফলের অন্যতম কারণ।
* চুলের গোঁড়ায় ঘাম জমে থাকলে, মাথা অপরিষ্কার রাখলে, নিম্নমানের প্রোডাক্ট ব্যবহারে বা কোনো প্রোডাক্ট স্যুট না করলেও এক্সেস হেয়ার ফলের প্রবলেম হতে পারে।
* অনেক সময় ওষুধের সাইড-ইফেক্টে ভয়াবহ মাত্রায় চুল পড়তে থাকে। বার্থ কন্ট্রোল পিল, কোলেস্টেরল কমানোর মেডিসিন, ব্রণের ট্রিটমেন্টে যেসব ওষুধ ব্যবহার করা হয় সেগুলোতে, অ্যান্টি ডিপ্রেশন ড্রাগ ইত্যাদি মেডিসিন অনেকদিন ধরে গ্রহণ করলে দীর্ঘমেয়াদী হেয়ার ফলের প্রবলেম হতে পারে।

টিনেজে চুল পড়া সমস্যা
টিনেজে চুল ন্যাচারালি সুন্দর থাকে। কিন্তু ঠিকঠাক যত্নের অভাবে অনেক সময় চুল ভেঙ্গে যায়, আগা ফেটে যেতে পারে, চুলের গোঁড়া দুর্বল হয়ে হেয়ার ফল হতে পারে। অপুষ্টিজনিত কারণে এই সময়ে অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। আবার হরমোনাল কারণে বয়সন্ধিকালে এই প্রবলেম অনেকেই ফেইস করে থাকে।

চুল পড়া

তাই এ পর্যায়ে চুলের যত্নে করণীয় সম্পর্কে জানবো-

শ্যাম্পু ব্যবহারে সতর্কতা 
সবার চুলে সব শ্যাম্পু সহনীয় হয়না। ফলে যেটা মাথার ত্বকের সাথে মানিয়ে নিচ্ছে, সেটা ব্যবহার করা উচিত। 
তাছাড়া চুল পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে লক্ষণীয় যে, শ্যাম্পুতে সালফেট, প্যারাবেন এবং সিলিকনের মতো পদার্থগুলো বেশি উপস্থিত না থাকাই ভালো। কারণ এগুলো চুলকে ভেঙে ফেলে। তাছাড়া চুলের গোড়া শক্ত করতে কন্ডিশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। কেননা এতে অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে মেরামত করার পাশাপাশি মসৃণ রাখতে সহায়তা করে।

পানি পান
নিয়মিত প্রায় প্রতিদিন দুই লিটার পানি, প্রচুর পরিমাণে সবুজ ও হলুদ শাকসবজি, শরীরে রক্ত তৈরি হয় এমন ধরনের খাবার খান। দুধ ও দুধের তৈরি খাবারে রয়েছে সবচেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম। দেহের গড়ন ও ওজন বুঝে পুষ্টিকর খাবার খান। চুলের পুষ্টির জন্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার জরুরি।

আরও পড়ুন: সৌন্দর্য হোক প্রাকৃতিক, ভালো অভ্যাসে সুস্থ ত্বক

মাথার ত্বক ম্যাসেজ করা
চুলের গোড়া মজবুত করতে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আঙ্গুল দিয়ে নিয়মিত মাথার ত্বক ম্যাসজ করলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। এটা শ্যাম্পু লাগানোর ঠিক আগে অথবা চুল ভেজা অবস্থায় করা যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, মাথার ত্বকে রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়ার ফলে চুল মজবুত হয়েছে। তাছাড়া প্রতিদিন অন্তত চার মিনিটের স্কাল্প ম্যাসাজ সময়ের সাথে সাথে চুলের ঘনত্ব এবং শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

খাবারে প্রোটিন বৃদ্ধি
পর্যাপ্ত প্রোটিনের অভাবে চুল পড়ে যায়। কেননা চুলের ফলিকলে বেশিরভাগ প্রোটিন থাকে। যা চুলকে মজবুত ও ঘন করতে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত দুধ, ডিম, মাছ, পালং শাক ও মটরশুটির মতো প্রোটিন খেলে চুল মজবুত ও ঘন করতে সহায়তা করে।

চুলের বৃদ্ধিতে ডিমের কুসুম
ডিমের কুসুমে একই প্রোটিন থাকে, যা চুলে শক্তিশালী ফলিকল তৈরি করে। কেননা ডিমের কুসুমে ভিটামিন এ এবং ডি, বায়োটিন এবং ফোলেট সহ চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক এমন বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। গবেষণা অনুসারে, ডিমের কুসুমে থাকা পেপটাইডগুলি চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করতে পারে। সেজন্য ডিমের কুসুমের সাথে হালকা গরম তেল একসাথে মিশিয়ে চুল ও মাথার ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। তারপর আধ ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।

চুল

গরম তেল ব্যবহার
শুষ্ক, ঝরঝরে বা ক্ষতিগ্রস্থ চুলে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট একটি জনপ্রিয় উপায়।
এটা নারকেল কিংবা আভাকাডো তেল হতে পারে। গবেষণা অনুসারে, নারকেল তেল ক্ষতিগ্রস্থ এবং অক্ষতিগ্রস্থ উভয় চুলেই প্রোটিনের ক্ষয়রোধ করতে সহায়তা করে। এছাড়া অ্যাভোকাডো তেলেও প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি ভিটামিন এ, বি-৫ ও ই রয়েছে। যা চুলকে ঘন ও মজবুত করতে সহায়তা করে।

রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার কমানো
সবাই চুলকে ঘন ও ঝলমলে রাখতে চায়। ফলে অনেক সময় চুলে বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষ করে ব্লো ড্রায়ার, স্ট্রেটেনিং আয়রন, হট কার্লার সহ অন্যন্য উত্তপ্ত স্টাইলিং দ্রব্য। 
যা চুলকে ভঙ্গুর ও গোড়া দুর্বল করে। তাই বিশেষজ্ঞরা চুলে অধিক পরিমাণ রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

দেহে পুষ্টির মাত্রা ঠিক রাখা
চুল শক্তিশালী ও ঝলমলে করতে দেহে পর্যাপ্ত খনিজ ও ভিটামিন থাকা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে, চুল পড়ার সাথে পুষ্টির ঘাটতির সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য দেহে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের ভারসাম্য ঠিক থাকা প্রয়োজন।

চুল পড়া রোধে করণীয়
চুল পড়ার সমস্যার সমাধান করতে খাদ্যতালিকার দিকে বিশেষ নজর রাখুন। চর্বিহীন প্রোটিন, লেবু, বাদাম, গোটা শস্য ও ভাল চর্বি চুল পড়ার সমস্যা কমায়।এর পাশাপাশি ভিটামিন বি, অ্যামিনো অ্যাসিড, আয়রন ও জিঙ্ক রাখুন খাদ্যতালিকায়। যা চুলে পুষ্টি জোগায় ও মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence