বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডিধারীরা কেন উপেক্ষিত, কারণ জানালেন ঢাবি অধ্যাপক

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন  © সংগৃহীত ছবি

দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় বিদেশফেরত পিএইচডিধারীদের অবহেলার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ বিষয়ে উদ্বেগ জানান। তিনি জানান, মূলত রাজনৈতিক কারণেই পিএইচডিধারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিযোগের ক্ষেত্রে উপেক্ষা করা হয়। এটা মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে উঠেছে।

তিনি লেখেন, “গত কয়েকদিনে আমার কাছে অন্তত তিনজন দেখা করতে এসেছেন যাদের সবার পিএইচডি ডিগ্রি আছে। একজন ইতালি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে, আর দুইজন মালয়েশিয়া থেকে রসায়ন ও সমাজবিজ্ঞানে পিএইচডি করেছেন। এদের একজন পোস্ট-ডকও করেছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন Q1 ও Q2 র‌্যাঙ্কের জার্নালে গবেষণা প্রকাশ করেছেন, সাইটেশনও ভালো।”

অধ্যাপক কামরুল বলেন, দেশের ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলোতেই এখনো পিএইচডিধারী শিক্ষকের অভাব রয়েছে। অথচ এ ধরনের যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীরা বারবার আবেদন করেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান থেকে সাক্ষাৎকারের ডাক পর্যন্ত পান না।

তিনি আরও বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শত শত কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স পড়ানো হয়। এইসব জায়গায় এই গবেষক ও পিএইচডিধারী তরুণদের নিয়োগ দিলে শিক্ষার গুণগত মান অনেক বেড়ে যেত। তাদের নিয়োগ মানেই রেডিমেড শিক্ষক এবং একইসঙ্গে গবেষক। ভবিষ্যতে পিএইচডির জন্য ছুটি বা বাড়তি ব্যয়ও লাগবে না।”

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন পিএইচডিধারীদের উপেক্ষা করা হয়—তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। তার ভাষায়, “আমাদের প্রশাসনে যারা আছেন তারা যেন ফ্রেশ মাস্টার্স ডিগ্রিধারীদের বেশি পছন্দ করেন। কারণ, তাদেরকে সহজে কাঁদামাটির মতো গঠন করা যায়, রাজনীতিতে যুক্ত করা যায়, এবং সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিন্তু অভিজ্ঞ পিএইচডিধারীরা ‘পোড়ামাটি’র মতো শক্ত, রাজনীতি করানো কঠিন। তাই তাদের নিতে উৎসাহ কম।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এই চিত্র বদলাবে এবং বিদেশফেরত, যোগ্য, গবেষণাভিত্তিক শিক্ষকরা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত উপকারে আসবেন।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!