‘বিশেষ জায়গার ফোনের পর’ সভা করতে না দেওয়া ৭৩-এর অধ্যাদেশের পরিপন্থী

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক  © লোগো

নতুন কারিকুলাম নিয়ে দেশব্যাপী তর্ক-বিতর্ক চলছে। নতুন এই শিক্ষাক্রম নিয়ে সমালোচনা করার কারণে কয়েকজন অভিভাবক ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা ও গ্রেফতার করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ একটি উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলো। ওই অনুষ্ঠানটি শেষ মুহূর্তে বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। আজ বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটা থেকে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১: আমরা কেন উদ্বিগ্ন?’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা হওয়ার কথা ছিল।  

পরে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ এক বিবৃতি বলছে, ‘বিশেষ জায়গা থেকে ফোন পাওয়া’র পরিপ্রেক্ষিতে এই আলোচনা অনুষ্ঠান হতে না দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা, মূল চেতনা ও সর্বোপরি ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশের পরিপন্থী। এ ধরনের একটি ন্যায্য পর্যালোচনা সভাকে পণ্ড করা মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ঢাবিতে আলোচনা করতে পারলেন না শিক্ষকরা

বিবৃতিতে বলা হয়, নিয়মানুসারে অনুষ্ঠানের শিরোনাম, আলোচকবৃন্দের নামসহ কলা অনুষদের ডিন বরাবর আবেদন করে এবং ব্যাংকে নির্ধারিত বুকিং ফি জমা দিয়েই আলোচনা অনুষ্ঠানের অনুমতি নেওয়া হয়। দুঃখজনকভাবে অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ আগে (১.৪৮ মিনিটে) কলা অনুষদের ডিন আয়োজকদের ফোনে জানান আলোচনা সভার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘বিশেষ জায়গা থেকে’ ফোনে বলা হয়েছে যেন মিলনায়তন শিক্ষক নেটওয়ার্ককে ব্যবহার করতে দেওয়া না হয় । তিনি দুঃখপ্রকাশ করে অনুষ্ঠানটি অন্যত্র করতে বলেন।   

“বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক মনে করে যে, এ ধরনের একটি জননীতি প্রণয়নে সকলের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উন্মুক্ত আলোচনা বাঞ্ছনীয়, এবং তা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। নাগরিক, অভিভাবক এবং সর্বোপরি শিক্ষক হিসেবে দেশের শিক্ষা কার্যক্রমের রূপরেখা সম্পর্কে অভিমত প্রকাশের পরিসর তৈরি করা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পেশাগত দায়িত্ব বলে আমরা বিশ্বাস করি। ‘বিশেষ জায়গা থেকে ফোন পাওয়া’র পরিপ্রেক্ষিতে এই আলোচনা অনুষ্ঠান হতে না দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা, মূল চেতনা ও সর্বোপরি ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের পরিপন্থী। এ ধরনের একটি ন্যায্য পর্যালোচনা সভাকে পণ্ড করা মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই  নতজানু ভূমিকার প্রতি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে। এছাড়া শিক্ষাক্রম নিয়ে যারা অভিমত প্রকাশ করছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের হয়রানি ও তাদের ওপর পরিচালিত নিবর্তনমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। একইসঙ্গে, অনতিবিলম্বে এ সূত্রে গ্রেফতারকৃত সকল অভিভাবক ও শিক্ষকের মুক্তির দাবি করছে।


সর্বশেষ সংবাদ