ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তারেক-জুবাইদার বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায়: ইউট্যাব

ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ  © লোগো

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আদালতের দেওয়া রায়কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ফরমায়েশি বলে আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। বুধবার (২ আগস্ট ২০২৩) ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে ১/১১ এর জরুরি সরকারের সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী বিশিষ্ট কার্ডিওলোজিস্ট ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলাটি করা হয়েছিল—তা ছিল সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ, তথাকথিত জরুরি সরকার ছিল বর্তমান আওয়ামী সরকারেরই আন্দোলনের ফসল। 

একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করে আজ রায় ঘোষণা করা হলো সেই পুরনো কৌশলে। এটি একটি ফরমায়েশি রায়। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ভীত আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে চেয়েছে আদালত সেভাবে লিখে এখানে উপস্থাপন করেছে মাত্র। যে মামলা চলার মতো আইনগত কোনো উপাদান নেই সেই মামলার রায় ঘোষণা করে মূলত এই মুহূর্তের সবচেয়ে অন্যতম একজন জনপ্রিয় নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন এবং একজন বরেণ্য চিকিৎসকের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হলো—জানানো হয়েছে একই বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, ভবিষ্যতে ডা. জুবাইদা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন, এমন আশঙ্কা ও ভীতি থেকেই সরকারের ইঙ্গিতে মামলাটির রায় দেওয়া হলো। এমন সময় এই আদেশ দেওয়া হলো যখন ভোটবিহীন অবৈধ মাফিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। এই আন্দোলনের সময় জুবাইদা রহমান দেশে ফিরলে আন্দোলনের গতি বৃদ্ধি পাবে ও নেতাকর্মীরা আরও চাঙ্গা হবে। এই ভয়ে ও ভবিষ্যতে যদি সঠিক ফর্মুলায় নির্বাচন হয়, তাতে যেন জুবাইদা রহমান অংশ নিতে না পারেন সেজন্য সাজানো মামলায় সরকারের নির্দেশে রায় ঘোষণা করা হলো। আমরা মনে করি এই রায় সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মুহুর্তে এ ধরণের আদেশ জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ফেরানোর অপচেষ্টা মাত্র।

একই বিবৃতিতে তারা বলেন, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ২০০৭ সালের জরুরি সরকারের আমলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও কয়েকটি মামলা হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরই সেই মামলাগুলো উধাও হয়ে যায়। মূলত বিএনপি তথা জিয়া পরিবারকে দমনের লক্ষ্যেই সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুদক এই মামলাটি করেছিল। এর পেছনে ক্ষমতাসীনদের চক্রান্ত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জিয়া পরিবারকে হেয় করার জন্যই বানোয়াট, কাল্পনিক ও অসত্য মামলায় তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই রায় দেওয়া হলো।

‘বর্তমান সরকারের আমলে দেশের অর্থ পাচার করে কানাডায় বেগম পল্লী তৈরি হলেও এসব দুর্নীতি তদন্তে দুদকের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। কারণ সরকারপন্থীরা এসব লুণ্ঠনে জড়িত। তাই তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে থাকা মামলার রায় দেওয়ার মানে জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে নির্মূল করার চক্রান্ত।’

ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা আরও বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের কোটি কোটি তরুণের রাজনৈতিক আইকন। দল পরিচালনায় তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত। দেশনায়ক তারেক রহমানের দক্ষতা, যোগ্যতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা অনন্য। সম্প্রতি তিনি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা ঘোষণা দিয়ে নিজের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও যোগ্যতাকে বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

তারেক রহমানের বাবা ছিলেন এ দেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। তার মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। যাকে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ ভোট দিয়ে তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আপোসহীন নেতৃত্বের কারণে তাকে ইতিমধ্যে ‘মাদার অব ডেমোক্র্যাসি’ উপাধি দেওয়া হয়েছে। সেই পরিবারের সন্তান এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আগামীদিনের কান্ডারি তারেক রহমান বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দিক নির্দেশনা দানকারী তরুণ প্রজন্মের তরুণ নেতা বাংলাদেশের মানুষের আশা-ভরসার স্থল তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করা হয়েছে উল্লেখ করে একই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমানসহ সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে পুনরায় একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশালে ফিরিয়ে নেওয়া।

এছাড়াও বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ডা. জুবাইদা রহমান একদিকে যেমন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ। তিনি এদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী বর্ণাঢ্য পরিবারের সন্তান। মেধাবী চিকিৎসক জুবাইদা রহমান পড়ালেখা করেছেন দেশের স্বনামধন্য ও সেরা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজে। যিনি তার ব্যাচের সেরা মেধাবী। তার পিতা মরহুম মাহবুব আলী খান বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সাবেক প্রধান এবং সাবেক মন্ত্রী। চাচা কর্নেল এমএজি ওসমানী আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক।

সুতরাং ডা. জুবাইদা রহমান আর দশজন সাধারণ মেয়ের মতো সহসায় বেড়ে ওঠেননি। তার বেড়ে ওঠার মধ্যে শৃঙ্খলা ও আভিজাত্য ছিল এবং এখনো আছে। সুতরাং তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা অবান্তর এবং ভিত্তিহীন। মূলত সরকার আদালতকে ব্যবহার করে অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই এই মামলাটি দীর্ঘ সময় ধরে টিকিয়ে রেখেছে, যার কোনো ভিত্তি নেই। আমরা মনে করি তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমান ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন—বলা হয় ওই বিবৃতিতে।


সর্বশেষ সংবাদ