সিজিপিএ ৪-এ ৩.৯৬ পেয়ে সারাদেশে প্রথম দারুন্নাজাতের দুই শিক্ষার্থী

এস. এম. নাজমুস সাকিব ও আবু জাফর মো. ছালেহ
এস. এম. নাজমুস সাকিব ও আবু জাফর মো. ছালেহ  © টিডিসি ফটো

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার অধীনে ৪ বছর মেয়াদী অনার্স কোর্সে সিজিপিএ ৪-এ ৩.৯৬ পেয়ে সারাদেশে প্রথম হয়েছেন দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থী। সমান সিজিপিএ নিয়ে সম্মিলিতভাবে প্রথম হয়েছেন তারা। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা-২০১৮ এর ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রকাশিত ফলে সমান সংখ্যক সিজিপিএ পেয়ে আল-কোরআন বিভাগ থেকে সারাদেশে প্রথম হয়েছেন মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম ফাহিম। এছাড়া একই ফল নিয়ে সম্মিলিতভাবে প্রথম হওয়া দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদ্রাসার ওই দুই শিক্ষার্থীরা হলেন আবু জাফর মো. ছালেহ ও এস. এম. নাজমুস সাকিব।

নাজমুস সাকিব ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ থানাধীন বারোবাজার গ্রামের আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শেখের ছেলে। তার বাবা পাক শরিফ দাখিল মাদ্রাসার মাদ্রাসার সহকারী সুপার। মা নাজমুন্নাহার নাজমা গৃহীনি। সে চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট।

সাকিব মাগুরায় অবস্থিত হাজী সাহেব হুজুর (র.) এর আনোয়ারুল উলুম সিদ্দিকিয়া হামিদিয়া (দাওরা) মাদ্রাসায় এবং মাগুরা সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসাতেও পড়ালেখা করেছেন। বাড়ির নিকটস্থ বেলাট দৌলতপুর আলিম মাদ্রাসাতে ছেলেবেলার অনেকটা সময় কাটিয়েছেন তিনি।

সাকিব বলেন, আমার জীবনে সফলতা খুব বেশি কিছু না। তারপরও সর্বশেষ অনার্সে সারাদেশে প্রথম হওয়া এটি অন্যতম সফলতা। আল্লাহর রহমতে আমি অনার্স পরীক্ষায় সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ৩.৯৬ পেয়েছি। সারাদেশে এটাই আমাদের অনার্স সব বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ পয়েন্ট।

এমন সফলতা নিয়ে তিনি বলেন, এ সাফল্যে যদি মা-বাবা, শিক্ষক, আত্মীয়-স্বজন- তারা যদি আনন্দিত হয়, গর্ববোধ করে, তাহলে আমি নিজেকে সম্মানিত হিসেবে অনুভব করবো। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব খুশি এই সফলতায়। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বিরাট দয়া।

আরও পড়ুন: সিজিপিএ ৪-এ ৩.৯৬ পেয়ে সারাদেশে প্রথম ঢাকা আলিয়ার ফাহিম

সেশন জটিলতায়ও কেটে গেছে সাকিবের কিছু সময়। তিনি জানান, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার অধীনে অনার্স করেছি। হয়তো ভাগ্য ছিলো, যার কারণে সেশন জোটের যাতাঁকলে পড়ে তিন-চার বছর নষ্ট হয়ে গেছে। সামনে মাস্টার্স বাকি আছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফাজিল তৃতীয় বর্ষ (অনিয়মিত) পরীক্ষা-২০১৮-তে অংশ নেয়া ৩৩ জনের মধ্যে ৩৩ জন, চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা-২০১৭-তে অংশ নেয়া ৬৪৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৩৮ জন এবং চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষা-২০১৮তে অংশ নেয়া ৭২৯ জনের মধ্যে ৭১৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে নাজমুস সাকিব জানান, আল্লাহর রহমতে বর্তমানে আমি টাঙ্গাইলের মধুপুরের বড়বাইদ জামেয়া দাওরা হাদিস মাদ্রাসায় হাদিসের খেদমতে নিয়োজিত আছি। পাশাপাশি ভবিষ্যতে পত্রিকা প্রকাশের চিন্তাভাবনা আছে। যদিও মাদ্রাসায় খেদমতের পাশাপাশি বর্তমানে একটি দ্বি-মাসিক পত্রিকা নেদাউল সালামের সম্পাদক হিসেবে প্রকাশনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

অন্যদিকে সমান সংখ্যক সিজিপিএ পেয়ে সাকিবের সঙ্গে প্রথমের কাতারে রয়েছেন আবু জাফর মো. ছালেহও। তিনি চাঁদপুর জেলার হাইমচর থানাধীন পশ্চিম চর কৃষ্ণপুর গ্রামের হাজ্বী মাওলানা খন্দকার খাজা আহমদের ছেলে। তার বাবা কাটাখালী হামিদিয়া আলিম মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। মা রহিমা বেগম একজন গৃহীনি। তিনি আট ভাই-বোনের মধ্যে সপ্তম।

ছালেহ আলিম পরিক্ষার পর ঢাকা দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদ্রাসায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স আল-হাদীস বিভাগে ভর্তি হন। পাশাপাশি গাজীপুর হরিপুর ফাজিল মাদ্রাসায় ফাজিলেও ভর্তি ছিলেন তিনি। ছালেহ বলেন, ফাজিল শেষে দারুন্নাজাত মাদ্রাসায় ২০১৮-১৯ বর্ষে ফিকহ বিভাগে ভর্তি হই। পাশাপাশি ২০১৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ডিপ্লোমা কোর্সেও অধ্যয়ন করছি।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে হাদিস বিভাগে প্রথম হওয়া সাকিব বলেন, জীবনের বরকতময় সফলতার জন্য নিজের অসাধ্য সাধনে চেষ্টার পাশাপাশি মা-বাবা, শিক্ষক, মুরুব্বীদের মন জয় করা অর্থাৎ তাদের উপকারে আসা বা খেদমত করা উচিত। সব থেকে বড় কথা হলো, নিজেকে দুনিয়ার সকল কিছু থেকে ফিরিয়ে এনে এক আল্লাহর মুখাপেক্ষী রাখতে হবে। তার কাছে প্রার্থনা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, জীবনের যা কিছু করতে চাই না কেনো- সবকিছু আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে নিতে হবে, এই মানসিকতা লালন করা। বিনয়ী ও আন্তরিক হতে হবে। যারা কবরবাসী হয়েছেন, তাদেরকে স্মরণ করে দোয়া করতে হবে। আর খেদমতে খালক্বের সুযোগ হলে সামান্যভাবে হলেও অংশগ্রহণ করতে হবে। তরুণদের জন্য প্রার্থনা রইলো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence