নর্থ সাউথের মোর্শেদ এখন গরুর খামারী

নিজের খামারে ওমর
নিজের খামারে ওমর   © সংগৃহীত

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার গাজীর খোয়া এলাকার নবগ্রামে ‘রুপালী এগ্রো’ নামে একটি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. মোর্শেদ আলম ওমর (২৪)। ২০২১ সালে ২৫ টি গরু নিয়ে তার খামারের যাত্রা শুরু। নর্থ সাউথ থেকে থেকে বিবিএ শেষে এমবিএ করছেন তিনি। পড়ালেখার পাশাপাশি গরুর খামার করে সফল এই তরুণ। 

ছোট বেলা থেকেই পশু-পাখির প্রতি টান ছিল ওমরের। সেই টান টান থেকেই এ ব্যবসায় আসা। তবে এজন্য অনেক বিদ্রূপ ও শুনতে হয়েছে তাকে। কেউ কেউ ‘গরুর ব্যাপারী’ বলে বিদ্রূপও করেছেন। নিজের কয়েক বছরের জমানো টাকা আর পারিবারিক জমিতে গড়ে তুলেন এই খামার। তার বাবা মো. ইসমাইল বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলেও জমি ছাড়া আর কোন সাহায্য নেননি।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে ডোপ টেস্ট কোথায় করাবেন

রুপালী এগ্রোর চারদিকে সবুজ আর সবুজ। সাড়ে ১৪ একর পতিত জমিতে পুকুর রয়েছে ১০টি। প্রবেশপথের ডান পাশে রয়েছে দুটি টিনের শেড। শেডের ভেতরে প্রতিটি গরুর জন্য স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়েছে আলাদা আলাদা চৌবাচ্চা। রয়েছে গরুর গোসল, চিকিৎসা ও প্রজননের জন্য আলাদা ব্যবস্থা। মাংস সরবরাহের জন্য খামারে গরু যেমন আছে, তেমনি দুগ্ধ উৎপাদনে আছে বিদেশি উন্নত জাতের গাভি। এছাড়াও খামারে আছে তিনটি রামছাগল, আছে তোতাপুরি জাতের ছাগি। 

কর্মচারী মো. ফজলুল হক বলেন, আমরা পাঁচজন এই খামারে কাজ করি। সকাল ৭টায় গরুগুলোকে খাবার দেই। এছাড়াও দুপুরে আর রাতে খাবার দেই। প্রতিটি গরুকে দিনে দুইবার গোসল করানো হয়। খাবার হিসেবে খৈল, ভুসি, সাইলেজ ও ঘাস দিয়ে থাকি। এখানে কোনো মেডিসিনের প্রয়োগ নেই। আমরা নিপ্পনি ঘাসের চাষ করি। সেগুলো খাওয়াই। 

খামারের মালিক মো. মোর্শেদ আলম ওমর বলেন, আমি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ শেষ করে এখন এমবিএ-তে অধ্যায়নরত। মোটাতাজা ও দুগ্ধ উৎপাদনের জন্য ২৫টি শাহীওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু দিয়ে যাত্রা শুরু করি। আমার খামারে ৮৫টি গরু রয়েছে। এখানে ইন্দোনেশিয়ান ক্রস জাতের গরু, আমেরিকান ব্রাহমা, ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানি শাহীওয়াল এবং পাকিস্তানি বল গরু রয়েছে। গত বছর কোরবানির পর থেকে আমি এই গরুগুলোকে লালন-পালন করেছি। কোনো গ্রোথ হরমোন ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে গরু গুলেকে বড় করেছি।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে আমি যখন খামার শুরু করি কোনো খামারি থেকে সহযোগিতা পাইনি। ইন্টারনেট, ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে দেখে দেখে শিখেছি। খামার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে এ পেশা বেছে নিয়েছি। প্রথম বছর হিসেবে ২০২১ সালে অনেক সাড়া পেয়েছি। 

মোর্শেদ আলম ওমর বলেন, শুরু করার আগে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব অনেকে অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু আমি গায়ে নেইনি কথাগুলো। আমি আমার লক্ষ্যে অটুট ছিলাম। বর্তমানে খামার করা একটি শিল্পে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে আমার থেকে অনেকে ধারণা নিচ্ছে কীভাবে খামার করতে হয়। আমি তাদের সহযোগিতা করি। এখন আমার অনেক বন্ধুরা খামার করা শুরু করেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী রফিকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে বর্তমানে বেকার তরুণরা কৃষি খামারের প্রতি ঝুঁকছে। তাদের শিক্ষা থাকায় খুব দ্রুত ভালো করছে। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সকল খামারির পাশে আছে। নানান সময়ে নানান পরামর্শ দিচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence