১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু, দিনমজুর থেকে জামাল এখন কোটিপতি
- রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, গাইবান্ধা
- প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:২৮ PM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪১ PM
জামাল হোসেনের (৫৭) বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্র গ্রামে। ছিলেন দিনমজুর। দৈনিক যে মজুরি পেতেন, তা দিয়ে সংসার চলানো ছিল কষ্টসাধ্য। ধারদেনা করে মাত্র দশ হাজার টাকা দিয়ে তিনি ১৯৮৪ সালে কিছু হাঁস কিনে ব্যবসা শুরু করেন। এতেই ঘুরে যায় জামালের ভাগ্যের চাকা। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
জামাল জানিয়েছেন, তিনি পর্যায়ক্রমে মাছ চাষ, মুরগি ও গরুর খামার গড়ে তোলেন। পাশাপাশি হার্ডওয়্যার ও পোল্ট্রি খাদ্যের ব্যবসাও করছেন। কিনেছেন প্রায় আট-নয় বিঘা জমিও। মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনের গতি পাল্টে দিয়েছেন তিনি। মাত্র ৩৫ বছরের ব্যবধানে দিনমজুর থেকে তিনি এখন কোটিপতি।
জামাল হোসেন শূন্য থেকে আজ কোটিপতির তালিকায় এসেছেন। জামাল হোসেনের মতো আরও উদ্যোক্তা তৈরি হলে এই উপজেলা থেকে বেকার সমস্যা দূর করা সম্ভব হবে। -মাহফুজার রহমান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা
সরেজমিনে জামাল হোসেনের খামার পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বর্তমানে তার এক একর ৫২ শতক জমিতে রয়েছে পুকুর। সেই পুকুরে মাছ চাষ করছেন তিনি। পুকুরের ওপরে মুরগির সেড। সেডের পাশেই গরুর খামার। খামারে রয়েছে ৫ হাজারের অধিক মুরগি।
মুরগি থেকে প্রতিদিন ডিম পাচ্ছেন প্রায় এক হাজারের অধিক। ডিম বিক্রি করে মাসিক প্রায় ৫০ হাজার টাকা, মাছ বিক্রি করে সাড়ে ১২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। তিনি বলেন, কথায় বলে পরিশ্রমে ধন আনে। আমি তা প্রমাণ করেছি। ভবিষ্যতে একটি মডেল খামার গড়ে তুলবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

জামাল হোসেন ছাড়াও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার এখন প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ খামার করে প্রত্যক্ষভাবে স্বাবলম্বী। এতে করে উপজেলাটিতে গরুর খামার ও পোলট্রি শিল্পের বিপ্লব ঘটেছে। ঘরে ঘরে হাঁস-মুরগি ও গরুর খামার গড়ে উঠেছে।
এদিকে, উপজেলায় গরুর খামার ও পোল্ট্রি শিল্পের প্রসার ঘটায় পোল্ট্রি খাদ্য ও ডিমের পাইকারি ব্যবসা গড়ে উঠেছে। উপজেলা শহর, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের হাট-বাজারে এখন অসংখ্য পোল্ট্রি খাদ্যের দোকান গড়ে উঠেছে। গড়ে উঠেছে ডিমের ব্যবসা।
বর্তমানে জামালের এক একর ৫২ শতক জমিতে রয়েছে পুকুর। সেই পুকুরে মাছ চাষ করছেন তিনি। পুকুরের ওপরে মুরগির সেড। সেডের পাশেই গরুর খামার। খামারে রয়েছে ৫ হাজারের অধিক মুরগি।
রামভদ্র গ্রামের ডিম ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিভিন্ন পোল্ট্রি খামার থেকে প্রতিটি ডিম ৮ টাকা ৩০ পয়সায় কিনে ৮ টাকা ৬০ পয়সায় বিক্রি করছি। এই ব্যবসা করে খামারিদের পাশাপাশি অনেক লোক স্বাবলম্বী হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, জামাল হোসেন শূন্য থেকে আজ কোটিপতির তালিকায় এসেছেন। উপজেলায় এমন উদ্যোক্তা খুবই কম। জামাল হোসেনের মতো আরও উদ্যোক্তা তৈরি হলে এই উপজেলা থেকে বেকার সমস্যা দূর করা সম্ভব হবে।