কে আগে ফুল দেবে, প্রতিমন্ত্রীর সামনেই ছাত্রলীগ নেতার ঘুষি

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে সাংস্কৃতিক এবং ইনডোর গেমস সপ্তাহের পুরস্কার বিতরণীর অনুষ্ঠান
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে সাংস্কৃতিক এবং ইনডোর গেমস সপ্তাহের পুরস্কার বিতরণীর অনুষ্ঠান  © সংগৃহীত

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের এক অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলকে ফুল দেওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তার সামনেই ছাত্রলীগের এক নেতাকে ঘুষি মেরেছেন আরেক নেতা।

এসময় প্রতিমন্ত্রী ধমক দিয়ে তাদের থামালেও অনুষ্ঠান শেষে তিনি সভাস্থল ত্যাগ করার পর দুই পক্ষের অনুসারীরা ক্যাম্পাসে ফের মারামারিতে জড়ায়।

গতকাল শনিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে সাংস্কৃতিক এবং ইনডোর গেমস সপ্তাহের পুরস্কার বিতরণীর অনুষ্ঠান ছিল। পুরস্কার বিতরণ শেষে ছাত্রনেতারা যখন প্রতিমন্ত্রীকে ফুল দিতে যান, তখনই গণ্ডগোলের সূত্রপাত।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত গাজীপুরের ডিসি এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, ছোট নেতা বড় নেতাকে টপকে প্রতিমন্ত্রীকে ফুল দিতে গেলে তার সামনেই একে অপরকে জামা টেনে ধরে। এক পর্যায়ে কিছু বুঝে উঠার আগে একজন আরেকজনকে ঘুষি মারেন। পরে প্রতিমন্ত্রী মহোদয় ধমক দিয়ে তাদের নিবৃত্ত করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজ ছাত্রলীগের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগে, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন এখন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক। কলেজ ছাত্রলীগের নেতা মো. মিজানুর রহমান ওই পদের প্রত্যাশী।

শনিবার অনুষ্ঠানের সময় মিজানুরের অনুসারীরা ফুল দিতে গেলে আল আমিনের সমর্থকদের সঙ্গে তাদের ঝামেলা বাঁধে। সেখানেই মিজানুরের অনুসারী আতিকুল্লাহ নকিবকে ঘুষি মারেন আল আমিন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, “নকিব ফুল দিতে গেলে আল আমিনের গায়ে ধ্ক্কা লাগে। আল আমিন তখন শাউট করে ওঠে, তারপর নকিবকে ধাক্কা মারে। তাতে নকিব পড়ে যায়।

পরে রাতে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। সে সময় মারধরের শিকার হন আতিকুল্লাহ নকিব। তাকে হাসপাতালে  প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে গাজীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাফিউল হক জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক আল আমিন বলেন, বিষয়টি মিটমাট হয়ে গেছে। অধ্যক্ষ স্যার বিষয়টি নিয়ে পরে বসবেন। অন্তর্কোন্দলের কারণে এটা ঘটেছে। অনুষ্ঠাস্থলে একজন বেয়াদবি করেছে, অপরজন তার প্রতিবাদ করেছে মাত্র।

আর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি পদের প্রত্যাশী নিলয় চন্দ্র সরকার বলেন, অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবেই শেষ হচ্ছিল। শেষ পর্যায়ে এমন ঘটনাটি ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত।

অনুষ্ঠানের ওই ঘটনা নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্থানীয় সাংসদ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ঘটনার পর সেখানেই আমার কাছে মাফ চেয়েছে তাদের একজন। পরের মারামারির ঘটনা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি আমি দেখব।

অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের জানান, অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনা তদন্তে সহযোগী অধ্যাপক সুশান্ত কুমার সরকারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ