কবর থেকে তোলা হলো জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ শাকিলের লাশ
- ভোলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০১:৫০ AM , আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৮ PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আহমেদ শাকিলের মরদেহ মৃত্যুর প্রায় এক বছর পর কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ। বুধবার (২ জুলাই) বেলা ১১টায় ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের টুমচর মসজিদের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।
এদিকে শহীদ শাকিলের মরদেহ উত্তোলনের খবরে এলাকাজুড়ে দেখা যায় অভাবনীয় জনসমাগম। শত শত নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-যুবক এমনকি শিশুরাও ছুটে আসেন কবরস্থানে। সিএমএম কোর্টের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
লাশ উত্তোলন কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মাহমুদ বুলবুল, ভোলা জেলার সিভিল সার্জন ডা. নাঈমুল হাসনাত, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কবির, শহীদ শাকিলের পরিবারের সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে আজ মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। আমরা শরীর থেকে খণ্ডিত ৯৬টি হাড় পেয়েছি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পুনরায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হব এবং পূর্বের স্থানে পুনঃদাফন সম্পন্ন হবে।’
ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের সভাপতি আল-আমীন রহমান বলেন, ‘২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারিতে থেকে লড়াই করে শহীদ হন জুলফিকার আহমেদ শাকিল। তিনি শুধু জুলাই অভ্যুত্থানের সময়ই নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরেই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সাহসী মুখ ছিলেন। কিন্তু আজ আমরা দেখছি— কেউ কেউ এই অভ্যুত্থানকে রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করছে। তাদের গোষ্ঠীস্বার্থে শহীদদের আত্মদান যেন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে না পড়ে, সেটিই আমাদের বড় চাওয়া।’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের’ শেষ ধাপে রাজধানীর মিরপুরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শাকিল। এরপর আঁগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হলে ৭ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।
শাকিলের মরদেহ উত্তোলনের মাধ্যমে নতুন করে বিচারের দাবি আরও তীব্র হয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবি— সকল শহীদের মর্যাদা নিশ্চিত করা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চেতনার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটাতে হবে।