জামায়াতের কোনো লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন নয় শিবির: ইবি সভাপতি

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দিচ্ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দিচ্ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান  © টিডিসি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জামায়াতে ইসলামের কোনো লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের ১১৬ নম্বর কক্ষে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র-রাজনীতির রূপরেখা ও ছাত্র সংসদ গঠন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে আমাদের কোনো লেজুরবৃত্তি নেই। আমাদের আলাদা সংবিধান আছে, আলাদা কর্মপদ্ধতি আছে। আমরা আমাদের মতো করেই চলি। আমাদের কেন্দ্রীয় সভাপতি জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমির এসে বলে দিয়ে যান না, আমরা নিজেরা ভোট দেওয়ার মাধ্যমেই কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচন করি।’

ইবি শিবির সভাপতি বলেন, ‘আমরা মনে করছি আমরা লেজুরবৃত্তিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী না, আমরা এ থেকে পুরোপুরি মুক্ত। ছাত্ররাজনীতি হওয়া দরকার অবশ্যই ছাত্র সংসদকেন্দ্রিক। ছাত্র রাজনীতি কলুষিত হওয়ার একটি কারণ হলো দায়বদ্ধতার অভাব। ছাত্র নেতারা মনেই করে না তারা শিক্ষার্থীদের কাছে দায়বদ্ধ। এটা না মনে করার কারণ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এভাবে ছাত্র নেতাদের তৈরি করতে পারেনি। এটা শিক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি আমাদের ছাত্র সংগঠনগুলোরও দুর্বলতা। তারা এটা বোঝাতেই পারেনি যে তুমি নেতা হয়েছো তার মানে তুমি শিক্ষার্থীদের কাছে দায়বদ্ধ। এই প্রশিক্ষণটা অবশ্যই ছাত্র সংগঠনকে দেওয়া উচিত ছিল।’

আরও পড়ুন: এনসিটিবির সামনে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত একাধিক

ছাত্র রাজনীতি কলুষিত হওয়ার দ্বিতীয় কারণ হিসেবে জবাবদিহিতার অভাবকে দায়ী করে মাহমুদুল হাসান বলেন,  ‘ছাত্রনেতাদের কোনোভাবেই জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না বা তারা আসছে না। শিক্ষার্থীদের কাছে জবাবদিহি করতে তারা বাধ্য এরকম একটা প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি এই জবাবদিহিতার পাশাপাশি ফাইনাল যে জবাবদিহি, পরকালের জবাবদিহির কথা মাথায় রেখে চলা উচিত। এ ছাড়া ছাত্ররাজনীতিতে মেয়াদকাল থাকা দরকার। বিভিন্ন কমিটির ক্ষেত্রে ছাত্রসংগঠন গুলোর আহ্বায়ক কমিটি ৭৫ দিনের জন্য গঠিত হলেও, তবে তা ৭৫ বছরেও তা পরিবর্তন হয় না। এ ধারা থেকে বের হয়ে আসতে পারলেই আমার মনে হয় ছাত্র রাজনীতির সংস্কার সম্ভব।’

শিক্ষক রাজনীতির বিষয়ে ইবি ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা দরকার কারণ আমার মতে, এই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অনেক ঘটনা ঘটে শিক্ষকদের প্ররোচনায়। শিক্ষার্থীদের না হয় রাজনীতি করে ভবিষ্যতে অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু শিক্ষকদের তো চাকরি নির্দিষ্ট, তার তো আর সামনে শিক্ষকতা ছাড়া অন্য কিছু করার সুযোগ নেই। ক্যাম্পাসের শিক্ষক রাজনীতি বৈধ থাকার কারণে তারা স্বার্থ হাসিলের জন্য শিক্ষার্থীদের যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করে। এ সময়ে ছাত্রসংগঠন গুলোর সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক ভাঙার চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক। ওনারা আমাদের সেই অভিভাবকত্ব দিতে পারছে না। তাদের কাছে আমরা নিরাপদ নই, ওনারা আমাদের ঠ্যাং ভেঙে ফেলতে চায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দিতে চায় না। এ জন্য আমার কাছে মনে হয় শিক্ষকদের শুধু পড়াশোনামুখী, গবেষণামুখী হওয়া দরকার। এই চিন্তাধারা যদি শিক্ষকরা করে থাকে তাহলে আমার মনে হয় কেয়ামতের আগ পর্যন্ত ছাত্র রাজনীতির সংস্কার নিয়ে এই গোলটেবিল বৈঠক করে কোনো লাভ হবে না।’

আরও পড়ুন: বাধ্য হয়ে বাজার থেকে বেশি দামে পাঠ্যবই কিনছেন অভিভাবকরা

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আলামিন হোসনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী, ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, সায়েম আহমেদ, ইয়াশিরুল কবীর, তালাবায়ে আরাবিয়ার সেক্রেটারি সাজ্জাতুল্লাহ শেখ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence