হালের ট্রেন্ড

আইডি ঝুঁকিতে, স্টিকার কমেন্টস প্লিজ...

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পোস্ট
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পোস্ট

ফেসবুকে কোটা আন্দোলন নিয়ে খোলা গ্রুপ ‘কোটা সংস্কার চাই (সকল ধরনের চাকরির জন্য)’। প্রায় ২৪ লাখ সদস্যের এই গ্রুপকে বাঁচাতে একসময় ‘স্টিকার কমেন্ট’ বেছে নিয়েছিলেন আন্দোলনের নেতা রাশেদ। গ্রুপজুড়ে তখন এমন অনেক পোস্ট দেখা গেছে, যাতে গ্রুপের এ্যাডমিন রাশেদ সবাইকে অনুরোধ করছেন লাইক-কমেন্টস করে গ্রুপকে চলমান রাখতে। সেই সব পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষকে বিনোদনের যোগানও দিয়েছে। এগুলোর সব পোস্টেই রয়েছে সহস্রাধিক ‘হাহা রিয়্যাক্ট’। যদিও গ্রুপ শেষ পর্যন্ত টেকেনি। খোলা হয়েছে ‘কোটা সংস্কার চাই (অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ ছাত্রসমাজ)’ নামে নতুন আরেকটি গ্রুপ।

বাস্তবে এমন মন্তব্য কতটা কাজে আসে? সত্যিই কি এসব স্টিকারের মাধ্যমে করা মন্তব্য ফেসবুক আইডি বাঁচাতে পারে?

জাহিদুল ইসলাম ইসলাম নামে একজন বলছেন, ‘এখনকার একটি ট্রেন্ড হচ্ছে, যারা একটি চেতনা বা ভাবনাচিন্তার পক্ষের লোক, তার অন্য পক্ষকে টার্গেট করে ফেসবুকে রিপোর্ট করে। অনেক সময় স্বার্থ জড়িত কারণেও এটা ঘটে। তখন ফেসবুক থেকে নোটিশ আসে, লগইন করা সম্ভব হয় না। কিন্তু এভাবে কমেন্টের মাধ্যমে যদি অনেক মানুষের সঙ্গে সংযোগ হয়, তখন হয়তো সেটি আইডির পরিচিতর জন্য ভালো হয়।’

ফেসবুক ঘেঁটে এমন আরো অনেকের স্ট্যাটাস দেখা গেছে। সেসব স্ট্যাটাসে যেমন কেউ নানা ধরণের মন্তব্য লিখেছেন, আবার কেউ শুধুমাত্র ইমোজি পোস্ট করেছেন। আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী রায়ান কামাল নিজের ছবির সঙ্গে লিখেছেন, ‘আইডিতে রিপোর্ট হচ্ছে, কমেন্টে রেস্পন্স’ করুন। সঙ্গে চিন্তার ইমোজি।

বরগুনার একজন তরুণী তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আইডি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, স্টিকার কমেন্ট প্লিজ’। সেখানে স্টিকার দিয়ে তার অসংখ্য বন্ধু-স্বজন কমেন্ট করেছেন, যার সংখ্যা কয়েকশো ছাড়িয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনাগ্রহী এই তরুণী বলছেন, কিছুদিন আগে তিনি ফেসবুক থেকে নোটিশ পান যে, তার আইডিতে কেউ প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে। এরপর তার একজন বন্ধুর পরামর্শে তিনি ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটি লেখেন, যাতে কোন কারণে আইডি হারিয়ে গেলেও সেটি পুনরুদ্ধার করা যাবে বলে তার আশা।

এমন অসজ্র পোস্ট রয়েছে ফেসবুকে

 

আদৌ কাজ হয়?
এ ধরণের মন্তব্যের মাধ্যমে ফেসবুকে সংযোগ বাড়তে পারে, তবে আইডি রক্ষা বা নিরাপত্তার সঙ্গে এর কোন সম্পর্কে নেই বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে ফেসবুক নিয়ে কাজ করে ইউল্যাবের একটি টিম ‘ফ্যাক্ট ওয়াচ’। এর উপদেষ্টা অধ্যাপক সুমন রহমান বলছেন, ‘আমরাও খেয়াল করেছি যে, কিছুদিন পরে পরে এরকম স্ট্যাটাস দেয়ার ঘটনা ঘটছে। যারা এসব লিখছেন, তারা খুব ফেসবুক সেলিব্রেটিও নন। কিন্তু আইডি হ্যাকিং থেকে বাঁচাতে বা আইডির ঝুঁকি বাঁচাতে যেসব লেখা হচ্ছে, তার সঙ্গে ফেসবুকের কাজের আসলে কোন সম্পর্ক নেই। কারণ ফেসবুক এভাবে কাজ করে না।’

তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘কেউ যদি কারো ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে চায়, তাহলে সেটার সঙ্গে এভাবে স্ট্যাটাসে মন্তব্য করা না করার সঙ্গে সম্পর্ক নেই। তিনি নানা কৌশলে সেই চেষ্টা করবে। আবার ফেসবুকে রিপোর্ট করার কারণে কারো আইডি যদি ফেসবুক বøক করে দিতে চায়, সেজন্য নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ পাঠাবে, তারপর ব্যবস্থা নেবে। সেটা ফিরিয়ে আনারও নানা পদ্ধতি আছে। সুতরাং কমেন্ট করে সেক্ষেত্রে প্রভাবিত করার কোন ব্যাপার নেই।’

সহজে জনপ্রিয়তা অর্জন বা নিজের প্রোফাইলে লাইক/কমেন্ট বাড়াতে অনেকে এ ধরণের কাজ করতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। কারণ যারা এ ধরণের স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তারা কেউই ফেসবুকে খুব পরিচিত নন।

ফেসবুক কি বলছে?
এ বিষয়টি জানতে ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এই লেখা পর্যন্ত সংস্থাটি এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে ফেসবুকের পাতায় বেশ কিছু পরামর্শ রয়েছে। তার মধ্যে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করতে বলা হয়। এর মাধ্যমে ফেসবুকে প্রবেশ করতে হলে দুইটি মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে। এর মধ্যে যেমন প্রচলিত পাসওয়ার্ড দিতে হবে, তেমনি মোবাইলের মেসেজে আসা কোড বা অথেনটিকেটর থেকে পাওয়া কোড প্রবেশ করিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। এর মাধ্যমে ফেসবুক আইডির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে জানিয়েছে ফেসবুক।

আইডিকে চলমান রাখার অন্তরালে স্টিকার কমেন্টে কোন উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়েই এটা এক আলোচিত প্রশ্ন। [বিবিসি বাংলা অবলম্বনে]


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence