বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের সেবা করতে চান ববির নাঈমুল

মো. নাঈমুল ইসলাম
মো. নাঈমুল ইসলাম  © টিডিসি ফটো

মো. নাঈমুল ইসলাম। ২০১৯ সালে লালমোহন কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ গ্রেডে এসএসসি পাস করেন তিনি। এরপর ২০২১ সালে লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী নাঈমুল। সেখানে তিনি কলেজ অধ্যক্ষের সহায়তায় বিনামূল্যে লেখাপড়া শেষ করেছেন।

এরপরের যাত্রাটা তার অন্যরকম। এসএসসিতে জিপিএ-৫ না থাকলেও এইচএসসির জিপিএ-৫ নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেন দেশের সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় অথবা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার। সফলও হয়েছেন তিনি। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ পেয়ে শেষে ভর্তি হন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার ইচ্ছা, তিনি বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের সেবা করবেন।

নাঈমুলের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেন লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন। নাঈমুল ইসলাম ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেলকার বাড়ির মো. জালাল মেলকারের ছেলে।

মো. নাঈমুল ইসলাম বলেন, আমি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাবা একটি প্রতিষ্ঠানের বাবুর্চির কাজ করেন। তাই ভালো কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি। তারপরেও নিজ চেষ্টায় এ গ্রেডে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। এরপর লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন স্যারের কৃপায় সেখানে ভর্তি হই।

আরও পড়ুন: উপাচার্য নেই ৪০ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে

‘‘প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট। আর শিক্ষার মানের দিক থেকেও উপজেলায় সর্বোচ্চ এই প্রতিষ্ঠান। তবে প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলেও সেখানে পড়তে আমার থেকে কোনো প্রকার টাকা নেননি অধ্যক্ষ স্যার। এমনকি ফ্রিতে আবাসিকে রেখে পড়ার সুযোগ করে দেন। তিনিই আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন জীবনে বড় কিছু হওয়ার।’’

নাঈমুল আরো বলেন, এইচএসসি পাসের পর শুরু হয় স্বপ্ন পূরণের মূল লড়াই। যার জন্য নিজেকে আরো জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে ঢাকায় গিয়ে কোচিং করতে হয়। যেখানের সব খরচ বহন করেছেন লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ স্যার। এরপর মেডিকেলের জন্য ভর্তি পরীক্ষা দেই। এসএসসিতে জিপিএ-৫ না থাকায় সেখানে আর ভাগ্য সহায় হয়নি। এরপর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লড়াই শুরু করি।

নিজের সাফল্যে অধ্যক্ষ রুহুল আমিনকে স্মরণ করে নাঈমুল বলেন, স্যারের উৎসাহ আর নিজের প্রচেষ্টায় ২০২২ সালে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স হয়ে যায়। পরে নিজের সুবিধার্থে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিজেকে দেশের স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত রাখবো ইনশাআল্লাহ।

লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন জানান, কেবল নাঈমুলই না, আমার প্রতিষ্ঠানটি প্রাইভেট হলেও এখানে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়। এরপর তাদের লক্ষ্য জেনে সেই গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত আমরা কাজ করি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের একটাই লক্ষ্য, প্রকৃত মেধাবী গড়া। আর সেই লক্ষ্য পূরণেই আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ