প্রাণভয়ে ৩ মাস ধরে স্কুলে যেতে পারছেন না প্রধান শিক্ষক
- যশোর জেলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৫ PM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ০১:০০ PM
যশোরের চৌগাছা উপজেলার সলুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান স্কুলের দরজা দেখতে পাননি প্রায় তিন মাস ধরে। প্রাণনাশের হুমকিতে আতঙ্কে তিনি বাড়িতেই থাকছেন। তবে নিয়মমাফিক সরকারি ইএফটি পদ্ধতিতে চলছে তাঁর বেতন-ভাতার লেনদেন। অন্যদিকে স্কুল চালাচ্ছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। অভিযোগ উঠেছে, তিনি প্রধান শিক্ষকের এমপিও আইডি ও ইআইআইএন নম্বর অবৈধভাবে ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গত ১২ জানুয়ারি সকালে ক্লাস শেষ করে অফিসে ফিরছিলেন তিনি। ওই সময় রাসেল নামে স্থানীয় এক যুবকের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক তাকে ঘিরে ধরে জোর করে অফিস কক্ষে নিয়ে যায়। কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রাণনাশের আশঙ্কায় আর বিদ্যালয়ে ফেরেননি তিনি।
এই ঘটনার পেছনে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম, বিজ্ঞান শিক্ষক মিজানুর রহমান এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি গোলাম মোস্তফার মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আজিজুরের ভাষ্য, বিজ্ঞান শিক্ষক মিজানুর রহমান রাসেলের আত্মীয়। তারই মিলেমিশে রাসেলকে ব্যবহার করে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিস, খুলনার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের অনেকে বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক না থাকায় স্কুলে শৃঙ্খলা ও পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চালিয়েছেন চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম ও জহুরুল ইসলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। বরং রাসেল খোলামেলা হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন, আজিজুর যেন স্কুলে আর না ফেরেন।
যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বিষয়টি আগে জানা ছিল না। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
যশোর শিক্ষা বোর্ডের উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক ডালিম হোসেন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সহকারী প্রধান শিক্ষক তার আইডি ব্যবহার করে কমিটি গঠনের আবেদন করেছেন, যা সম্পূর্ণভাবে আইনবিরোধী। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’