অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেন মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থী

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেন মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থী
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেন মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন শতভাগ ফ্রি স্কলারশিপে অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছে বিশ্বসেরা অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এর আগে ২৫টি পাবলিকেশন আর আইইএলটিএস স্কোর ৭.৫ সহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি আবেদন করেন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া আমেরিকাসহ বেশ কিছু নামি দামি দেশের উচ্চসারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। যার বেশির ভাগ আবেদনই গ্রহণ হলেও তার স্বপ্ন তাড়া করে বেড়াই অক্সফোর্ডে পা রাখার। তাই তিনি জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরার সুযোগকে বাদ দিয়ে আবেদন করতে থাকেন তার স্বপ্নের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।

প্রথম বার সকল পর্যায়ে উত্তীর্ণ হলেও শতভাগ ফ্রি স্কলারশিপ না পাওয়ায় তিনি দ্বিতীয়বার আবেদন করেন। দ্বিতীয়বারেও শতভাগ ফ্রি স্কলারশিপ না পাওয়ায় তৃতীয়বার আবেদন করেন এবং সফল হন। ২০১৮ থেকে অক্সফোর্ড পড়ার চেষ্টা অবশেষে সফল হয় তার।

এ বিষয়ে তিনি তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, "প্রথমবার যখন অক্সফোর্ড থেকে পজেটিভ বার্তা পাই সেই দিনটি আমার ভোলার নয়। তবে সেখানে পড়াশোনা চালানো ব্যয়বহুল হওয়ায় আমার পক্ষে শতভাগ ফ্রি স্কলারশিপ ছাড়া সেখানে পাড়ি দেয়া সম্ভব ছিলনা। তাই বার বার চেষ্টার পর ৩য় বারে গিয়ে সফল হয়।

তিনি আরো জানান, আগামী অক্টোবরে আমি স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচরণ করতে পারব। ভালো মানের একজন বিজ্ঞানী হওয়ার রসদ জোগাড়ে সচেষ্ট থাকব, যেন আগামী বাংলাদেশকে গবেষণা ও বিজ্ঞানজগতে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি। কারণ, উন্নত ও অনেক উন্নয়নশীল দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ গবেষণায় বেশ পিছিয়ে, যা কোভিড-১৯ মহামারিতে এর তীব্রতা দৃশ্যমান হয়েছে। তাই আগামী দিনে প্রত্যাশা থাকবে, বাংলাদেশ থেকে যেন আরও বেশি বেশি শিক্ষার্থীর অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, হার্ভার্ড, এমআইটি, স্ট্যানফোর্ডসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হয়, যাতে সেখান থেকে অর্জিত জ্ঞান উন্নত গবেষণার উর্বর ক্ষেত্র হিসেবে অনুসরণীয় বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবদান রাখতে পারে।

এ ক্ষেত্রে আসলে সুযোগ করে নিতে হবে। আর এ জন্য থাকতে হবে দৃঢ় অধ্যবসায় ও স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার সফল প্রয়াস। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম যেমন বলেছিলেন, ‘স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে। স্বপ্ন সেটাই, যেটা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।’ এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই লক্ষ্যকে স্থির রেখে স্বপ্ন দেখা শুরু করতে হবে, আর এ ক্ষেত্রে বাধা এলে তা দূরে ঠেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সূদৃঢ় প্রত্যয় থাকতে হবে।

যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট, বিশেষ করে সমাজ ও পরিবারগুলোতে এখনো উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়নি, কিন্তু সময় এসেছে পরিবর্তনের। কারণ, একটি দেশ ততটাই উন্নত, যতটা উন্নত গবেষণায়। তাই সরকার, সমাজ ও পরিবার—সবারই উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলা। তাহলে হয়তোবা তাঁদের মধ্যেই আমরা খুঁজে পাব ভবিষ্যতের বিজ্ঞানী, যাঁদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।"

উল্লেখ্য মাভাবিপ্রবির সাবেক এই শিক্ষার্থী বর্তমানে বায়োইনফরমেটিকস ডিভিশন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি, সাভার, ঢাকায় সায়েন্টিফিক অফিসার ও ইনচার্জ পদে কর্মরত আছেন।


সর্বশেষ সংবাদ