জুমার রাতে হাদিসে ঘোষিত যে সময়ে দোয়া করলেই কবুল হয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩৫ AM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৪২ PM
ইসলামি শরিয়তের আলোকে জুমার রাত বিশেষ ফজিলতের সময় হিসেবে বিবেচিত। আরবি হিসেবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতকে জুমার রাত ধরা হয়। এই রাতে বিশেষভাবে কিছু আমল ও দোয়ার প্রতি মনোনিবেশ করার জন্য উৎসাহিত করেছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। বিশেষ করে রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দোয়া করলে তা ফিরিয়ে দেন না আল্লাহ তাআলা।
সহিহ সূত্রে বর্ণিত হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘পাঁচটি রাত এমন রয়েছে, যেগুলোতে করা দোয়া ফেরত যায় না—১. জুমার রাত, ২. রজব মাসের প্রথম রাত, ৩. শাবান মাসের ১৪ তারিখের রাত (শবে বরাত), ৪. ঈদুল ফিতরের রাত এবং ৫. ঈদুল আজহার রাত।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক: ৭৯২৭)
জুমার রাতের বিশেষ মর্যাদা সম্পর্কে নবীজি (সা.) আরও বলেন, ‘হে আলী! শুক্রবার রাতের শেষ তৃতীয়াংশে সাহস করে উঠে পড়ো, কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং এতে দোয়া কবুল হয়।’ (মুসতাদরাক আলাস সহিহাইন: ১১৯০)
অতএব, জুমার রাতে তাহাজ্জুদ নামাজের সময় বা শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহর কাছে দোয়া করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এই সময়টিতে বান্দার দোয়া ফেরত যান না। তাই এ রাতে মনোযোগ ও দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে আল্লাহর কাছে প্রার্থনায় নিয়োজিত হওয়া উচিত।
দোয়া কবুলের জন্য কিছু নিয়মও হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। যেমন—তাহাজ্জুদ নামাজ শেষে সুরা ফাতিহা এবং তিনবার করে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করা, এরপর নবীজি (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করে দোয়া করা। দোয়ায় তাড়াহুড়া, হতাশা কিংবা সন্দেহ না রাখা জরুরি। এমন আচরণ দোয়ার কবুলে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না।’ (তিরমিজি: ২১৩৯)
আরেক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম গুনাহ বা আত্মীয়তা ছিন্নের দোয়া না করলে, আল্লাহ তাকে তিনটির যেকোনো একটি দেন—১. কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি দান করেন, ২. তা পরকালের জন্য সংরক্ষণ করে রাখেন, ৩. কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করেন।’ (আত-তারগিব: ১৬৩৩)
সবশেষে, আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব।’(সূরা মুমিন: ৬০)
আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সবাইকে জুমার রাতের এই বরকতময় সময় কাজে লাগিয়ে দোয়ার মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য অর্জনের তাওফিক দেন—আমিন।