উইটসা অ্যাওয়ার্ড পেলো এটুআই এর মুক্তপাঠ ও নাইস

  © সংগৃহীত

অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের লক্ষাধিক মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি ও শিক্ষাদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘উইটসা ২০২৩ গ্লোবাল ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস’ অর্জন করলো এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই-এর দুই উদ্ভাবনী উদ্যোগ ‘ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড এন্টারপ্রেনিউরশিপ (নাইস)’ ও ‘মুক্তপাঠ’। 

মালয়েশিয়ার কুচিং শহরে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ডব্লিউসিআইটি ২০২৩ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনে বৃহস্পতিবার রাতে এই পুরস্কার দেয় বিভিন্ন দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংগঠনগুলোর জোট-ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্স (ডব্লিউআইটিএসএ)। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ডব্লিউআইটিএসএ-এর চেয়ারম্যান সীন শিয়াহর হাত থেকে এ মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কারটি গ্রহণ করেন এটুআই-এর প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আলাভী জামান দিশা ও ই-লার্নিং কো-অর্ডিনেটর জিনিয়া জেরিন।

সম্মানজনক এই পুরস্কারের জন্য বিভিন্ন দেশের ১৩০টি প্রকল্প জমা পড়ে। এখান থেকে পাবলিক খাতের ডিজিটাল অপারচুনিটি/ইনক্লুশন অ্যাওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে ১ম স্থান অর্জন করে এটুআই এর উদ্যোগ নাইস এবং ই-এডুকেশন অ্যান্ড লার্নিং অ্যাওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে ১ম স্থান অর্জন করে মুক্তপাঠ।

সরকারি ও বেসরকারি/এনজিও খাতের জন্য মোট ১৪ ক্যাটাগরিতে এবছর অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এর মধ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে লক্ষাধিক বেকার তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ‘নাইস’ উদ্যোগ ডিজিটাল অপারচুনিটি/ইনক্লুশন অ্যাওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে এই সম্মাননা অর্জন করে। ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে লক্ষাধিক মানুষকে অনলাইন শিক্ষাদানে সুযোগ করে দেয়ার স্বীকৃতি হিসেবে ই-এডুকেশন অ্যান্ড লার্নিং অ্যাওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে এই সম্মাননা অর্জন করে মুক্তপাঠ। 

ওয়ার্ল্ড ইনোভেশন, টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিস অ্যালায়েন্স (উইটসা) প্রতিবছর এই পুরস্কারের আয়োজন করে থাকে। বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তি খাতে একে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশের বেকার সমস্যা সমাধানে দক্ষতা উন্নয়নে তৈরি করা হয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স ফর স্কিলস, এডুকেশন, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ (নাইস)। ডাটানির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নীতি প্রণয়ন, যুবাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদান, বিভিন্ন শিল্পের মধ্যে ম্যাচমেকিংয়ে সমর্থন করা, তরুণদের চাকরি পাওয়ায় ওয়ান স্টপ সমাধান, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং ও গাইডেন্স সহজতর করা, ভবিষ্যতে পেশার ধরনের মধ্য যেসব পরিবর্তন আসবে তার পূর্বাভাস প্রদান, কর্মসংস্থান রেকর্ড ট্র্যাক করা, তরুণদের জন্য কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরি এবং সর্বোপরি তাদের দক্ষতা অর্জনে সময়, ব্যয় ও মূল্য হ্রাস করার লক্ষ্যে কাজ করছে নাইস। সরকারের ২৩টি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৩২টি বিভাগ/অধিদপ্তর এবং ৪৪টি শিল্প-মালিক সমিতি/ চেম্বার অব কমার্স/ ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিল এরইমধ্যে এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত রয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি/ নিয়োগকর্তা ও চাকুরিদাতা ওয়েবসাইটের সাহায্যে ২ লক্ষ ৭৪ হাজারেরও অধিক বেকার তরুণদের চাকুরির সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। 

অন্যদিকে, ‘মুক্তপাঠ’ বাংলা ভাষায় সর্ববৃহৎ ই-লার্নিং প্লাটফর্ম যেখানে অনলাইনে সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। মুক্তপাঠে এ পর্যন্ত ৪৬.১৬ লক্ষেরও অধিক প্রশিক্ষণার্থী নিবন্ধিত রয়েছেন যারা ২৮০ টি কোর্সের বিষয়ে জ্ঞানার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন এবং ২৮ লক্ষ ৭১ হাজারেরও অধিক প্রশিক্ষণার্থী সফলতার সাথে কোর্স সম্পন্ন করায় সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান মুক্তপাঠের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনলাইনে কোর্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এ পর্যন্ত ৬০ হাজারেরও অধিক সরকারি কর্মকর্তা মুক্তপাঠ-এ কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন কোর্সকে নাগরিকদের ব্যবহারের জন্য সহজলভ্য করার লক্ষ্যে মুক্তপাঠের একটি অ্যাপও প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ২ লক্ষ ২৫ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী অ্যাপটি ব্যবহার করে মুক্তপাঠে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে।

 
বাংলাদেশের সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়ে উইটসার চেয়ারম্যান সীন শিয়াহ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে খাতে অল্প সময়ে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে অগ্রসর হওয়া নিঃসন্দেহে গৌরবের। নিত্যনতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে সারাদেশে প্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য এটুআই-এর প্রতি অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি। বৈশ্বিক এই সংকটময় মুহূর্তে প্রযুক্তির উৎকর্ষতা আমাদের সমস্যা মোকাবেলার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

উইটসা অ্যাওয়ার্ড নাইটে সম্মাননা অর্জন করায় এটুআইকে অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)। উইটসা অ্যাওয়ার্ড অর্জন প্রসঙ্গে বিসিএস সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার বলেন, বিসিএস প্রযুক্তি সংগঠনগুলোর অভিভাবক হিসেবে বরাবর কাজ করে আসছে। দেশের উদ্ভাবন এবং কার্যকর প্রকল্পকে উইটসার কাছে ঠিকমতো উপস্থাপন করতে বিসিএস সর্বদা বদ্ধ পরিকর। এটুআই-এর অর্জন দেশের প্রযুক্তিখাতকে গৌরবান্বিত করেছে।
অনুষ্ঠান মঞ্চে দ্য ন্যাশনাল টেক অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়েশিয়া (পিকম) এর চেয়ারম্যান অং চিন সিয়ংসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তথ্য-প্রযুক্তিখাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে গত বছরে জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকারি সকল দপ্তরের তথ্য ও সেবা একক প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রদানের স্বীকৃতি হিসেবে চেয়ারম্যান ক্যাটাগরিতে ‘ন্যাশনাল পোর্টাল ফ্রেমওয়ার্ক’ এবং কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় প্রযুক্তির সাহায্যে ডাটাভিত্তিক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নাগরিকদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের স্বীকৃতি হিসেবে ইনোভেটিভ ই-হেলথ ক্যাটাগরিতে ‘কোভিড-১৯ ড্যাশবোর্ড’ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই সম্মাননা অর্জন করে।

উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ও ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এটুআই প্রোগ্রাম স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিক সেবা সহজীকরণে কাজ করে যাচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence