সন্তান জন্ম দিয়ে হাসপাতালের বেডেই পরীক্ষা দিলেন ইডেন কলেজছাত্রী

রাতে সন্তান জন্মদিয়ে সকালে হাসপাতালের বেডে বসেই পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি
রাতে সন্তান জন্মদিয়ে সকালে হাসপাতালের বেডে বসেই পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি  © সংগৃহীত

রাতে সন্তান জন্মদিয়ে সকালে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ইডেন মহিলা কলেজের মাস্টার্স শেষ পর্ব ২০১৭-২০১৮ সেশনের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী খাদিজা আক্তার। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের বেডে বসেই পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি।

এর আগে, গত সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে মোহাম্মদপুর সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন খাদিজা। খাদিজার প্রথম সন্তান এটি। তার পরীক্ষার সময় পাশে ছিলেন ঢাকা কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক। খাদিজার এর আগের পরীক্ষাটি ছিল ২৬ সেপ্টেম্বর।

তিনি বলেন, সকাল থেকে শুধু ভাবছিলাম, কখন আমাকে কেবিনে দেবে। কেবিনে এসে বার্ধক্যবিষয়ক জরাবিজ্ঞানের বইটি একটু নেড়েচেড়েও দেখেছি। শুধু মনে হয়েছে, আর একটু যদি পড়ে নিতে পারতাম। চিকিৎসক ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ওষুধ দিয়েছিলেন। আর পরীক্ষার সময় শরীরের ব্যথার কথা প্রায় ভুলে গিয়েছিলাম। শুধু মনে হয়েছে, যে করেই হোক, পরীক্ষাটা দিতে হবে। পরীক্ষা বেশ ভালোই হয়েছে।

খাদিজা ইডেন মহিলা কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা হলে গত বছরের ডিসেম্বর মাসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনায় পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। চলতি মাসের ৯ তারিখ পরীক্ষা শুরু হয়। আগের পরীক্ষাগুলো খাদিজা ঢাকা কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়েই দিয়েছেন। আগামী ৩ অক্টোবর তাঁর শেষ পরীক্ষা।

খাদিজা ও শাহরুফের বিয়ে হয় গত বছরের মার্চ মাসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যালয়ে আইটি বিভাগে কর্মরত আছেন শাহরুফ। তিনি বলেন, হাসপাতালে খাদিজার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য হাতে খুব কম সময় ছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষসহ পরীক্ষার সংগে সংশ্লিষ্ট সবাই যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

খাদিজার হাসপাতালে পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রুনা লায়লা। তিনি বলেন, এই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমার কাছে মনে হয় মায়েরা চাইলে সবই পারে। পরীক্ষার পুরোটা সময় আমার একবারের জন্যও মনে হয় নাই পরীক্ষা দিতে তার কোনো অস্বস্তি লাগছে। সন্তান হওয়ার পর যেন তার মনোবল আরও বেড়ে গিয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ