বেরোবিতে সচেতন শিক্ষকদের ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৪:৫০ PM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৪:৫০ PM
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অনার্স প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে এক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে সচেতন শিক্ষকদের ব্যানারে “আমরা দেখতে চাই কার কী তাতে?” শিরোনামে এই প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেন তারা।
প্রতিবাদী ব্যানারে শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান বিভিন্ন ইস্যু তুলে ধরে বলেন। এসময় ব্যানারটির মোড়ক উন্মোচন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের জ্যৈষ্ঠ অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান।
এ সময় শ্লেষাত্মকভাবে ব্যানারে বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়। ব্যানারে লেখা হয়, দুই ইউনিটে ফেল করে একজন শিক্ষার্থী অন্য ইউনিটে প্রথম স্থান অধিকার করতেই পারে, উপাচার্য সেই প্রার্থীর বাসায় কোনো কারণে যেতেই পারেন, উপাচার্যের বাসায় ওই শিক্ষার্থী যাওয়ার বিষয়টি খবরে আসতেই পারে, সংশ্লিষ্ট ইউনিটের সমন্বয়ক সেই প্রার্থীকে দেখে চমকে উঠতেই পারেন, সংশ্লিষ্ট অনুষদে ডিন চরম অস্বচ্ছতার সাথে পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করতেই পারেন, সংশ্লিষ্ট অনুষদের জ্যেষ্ঠ-অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পরীক্ষার কার্যক্রমে যুক্ত না-ই করা হতে পারে, যাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই তাদেরকেই পরীক্ষার মূল দায়িত্ব দেওয়া যেতেই পারে, সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন পদ বিধিলঙ্ঘন করে উপাচার্য নিজে ধরে রাখতেই পারেন, বিভাগীয় প্রধান হওয়ার উপযুক্ত শিক্ষক থাকার পরও উপাচার্য সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ধরে রাখতেই পারেন, প্রথম হওয়া অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতেই পারেন, ভর্তির জন্য কাগজপত্র যাচাই করার পূর্বেই অভিযুক্ত প্রার্থীকে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ করে দিতেই পারেন, সেই প্রার্থীর বোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতেই পারেন বলে উল্লেখ করেন শিক্ষকরা।
এছাড়াও তথাকথিত ফাউন্ডেশন কোর্সে থাকাকালীন ঢাকায় অবস্থান করেও ওই শিক্ষককে মহিলা হলের সহকারী প্রভোস্ট করা যেতেই পারে, ঝড় বুলবুল থেমে যাওয়ার পর ঝড়ের অজুহাতে পরীক্ষা একদিন পিছাতেই পারে, সংশ্লিষ্ট ইউনিটের পরীক্ষা নিয়ে জনমনে সন্দেহের উদ্রেক হতেই পারে, অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রশাসন একটি লোক দেখানো তদন্ত কমিটি করতেই পারেন, তদন্ত কমিটিতে অনভিজ্ঞ এবং শিক্ষানবিশ নতুন শিক্ষককে প্রশাসন সদস্য সচিব করতেই পারেন, প্রতিবাদী শিক্ষকগণের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিকে ‘একদল ইউনিফর্ম পরিহিত শিক্ষকের অস্থিতিশীলতার চেষ্টা’ হিসেবে আখ্যা দিতেই পারেন, কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভা ছাড়াই প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ভর্তি স্থগিত পদও ধরে রাখতেই পারেন, একই সাথে তদন্ত কমিটির কাজ এবং ভর্তি গ্রহণের কাজ অযৌক্তিকভাবে চলতেই পারে, একজন শিক্ষার্থী অনিয়মের মাধ্যমে না এসে অনেকে ওই পথে এসেছে বলে দেওয়ার অনেকেই সন্দেহ করতেই পারে এমন প্রশ্ন রাখেন ব্যানারে।
এসময় উপস্থিত শিক্ষকদের বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির সুমন, সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ, নীলদলের সাধারণ সম্পাদক আসাদ মন্ডল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দীন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, সহ-সভাপতি এইচ এম তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।