ইবিতে ইয়াস বাংলাদেশের সায়েন্টিফিক ইভেন্ট ও স্টুডেন্ট এগ্রো লিডারশিপ বুটক্যাম্প অনুষ্ঠিত

বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ইয়াস বাংলাদেশের ইবি শাখার উদ্যোগে বুটক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ইয়াস বাংলাদেশের ইবি শাখার উদ্যোগে বুটক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়  © টিডিসি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি উদ্ভাবনে তরুণদের অনুপ্রাণিত করে কৃষিক্ষেত্রে নতুন নতুন আইডিয়া তৈরি করে কৃষির টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইয়াস বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে ‘ইয়াস সায়েন্টিফিক ইভেন্ট ২০২৫, এগ্রিভেঞ্চার: স্টুডেন্ট এগ্রো লিডারশিপ বুটক্যাম্প’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ইয়াস বাংলাদেশের ইবি শাখার উদ্যোগে এই ইভেন্ট বুটক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পোস্টার প্রেজেন্টেশন, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেসেন্টেশন, এগ্রি মাইন্ড কুইজ এবং ‘মিনিট টু ফাইন্ড ইট’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যুক্ত ছিল দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস।

বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ও ইয়াস বাংলাদেশের ন্যাশনাল অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ড. আবু হেনা মোস্তফা জামালের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বাবলি সাবিনা আজহার। অনুষ্ঠানে কি-নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

অনুষ্ঠানে কি-নোট স্পিকার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ‘কৃষি মাটিতে নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া: নাইট্রোজেন চক্রের ওপর কীটনাশক এবং সারের প্রভাব’ শীর্ষক প্রেজেন্টেশন দেন। সেখানে তিনি গাছের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নাইট্রিফাইয়িং ব্যাকটেরিয়ার ওপর সার ও কীটনাশকের প্রভাব কেমন, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।

আরও পড়ুন: জাকসুর ফল ঘোষণার আগে এক মিনিট নীরবতা পালন

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে আগত শিক্ষার্থীরা পাওয়ারপয়েন্ট প্রেসেন্টেশন, পোস্টার প্রেসেন্টেশন, এগ্রি মাইন্ড কুইজ ও মিনিট টু ফাইন্ড ইট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন৷ এগ্রি মাইন্ড কুইজে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন যবিপ্রবির সিরাজুত মুবিন, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন চ্যাম্পিয়ন ইবির জাকারিয়া বাপ্পি, পোস্টার প্রেজেন্টেশন চ্যাম্পিয়ন খুবির রাজশ্রী দাস সৃজা এবং মিনিট টু ফাইন্ড ইট চ্যাম্পিয়ন প্লাবন দাস। বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, বর্তমানে যে দেশে প্রযুক্তি যত উন্নত, সে জাতির ভাগ্য তত সুপ্রসন্ন। চতুর্থ বিপ্লবের যে সুযোগ সুবিধা তা বাংলাদেশের মানুষের কাছে এখনো পৌঁছাতে পারেনি। শিক্ষা,  গবেষণায় এখনো সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। উন্নত বিশ্বে প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের জীবন পরিচালনা করা হয়। আশ্চর্যের বিষয় বাংলাদেশ তার ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারেনি। তরুণরা যদি এগিয়ে আসে, তবে কৃষিই হয়ে উঠবে আগামী দিনের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের হাতিয়ার।

তিনি আরও বলেন, ‘খাল-বিলে ভরা আমাদের এই বাংলাদেশ কিন্তু এখন গ্রামগঞ্জের সব পুকুরই ভরাট করা হচ্ছে। এ জন্যই এখন আমাদের অন্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। অবাক করার বিষয় ইবিতেও একটি পুকুর রয়েছে, যেখানে বছরে বছরে দুর্ভাগ্যজনকভাবে হলেও লাশের উদ্ভব ঘটে, কিন্তু সেখানে মাছ চাষ করা হয় না। বছরে যত টাকা আমাদের পেছনে খরচ করা হয়, তার কতটুকু আমরা মূল্যায়ন করতে পারছি, তা প্রশ্ন থেকে যায় ‘ এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনষ্ক হয়ে, জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে নতুন কিছু আবিষ্কারের পরামর্শ দেন।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক এই প্ল্যাটফর্ম ১৯৫৭ সালে তিউনিসিয়ায় মাত্র ৮টা দেশে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে প্রায় ৫৬টি দেশে প্রায় ১১ হাজারের বেশি সক্রিয় সদস্য নিয়ে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এটি এমন একটি নেটওয়ার্ক, যেখানে সবাই কৃষি ও খাদ্যব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে কাজ করতে পারেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এর যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শতাধিক সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। সদস্যরা শুধু ক্লাসেই নয়, সরাসরি মাঠপর্যায়ে পরিদর্শন করে কৃষকদের থেকে তথ্য নিয়ে বিভিন্ন জরিপ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।


সর্বশেষ সংবাদ