দ্রুত একাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবিতে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

বাকৃবিতে বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা
বাকৃবিতে বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিএসসি ইন ভেট সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি ডিগ্রি চালুর আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দ্রুত একাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবিও জানান। 

মানববন্ধনে পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তারা বিভিন্ন স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান। ‘প্রশাসনের কালক্ষেপণ, মানি না মানব না’; ‘প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘বহিরাগতের হামলার বিচার চাই, বিচার চাই’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।পাশাপাশি তারা ‘বহিরাগত হামলার বিচার চাই, দ্রুত একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা হোক, আর কত অপেক্ষা, আর কত কালক্ষেপণ’- লিখিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে প্রতিবাদ জানান।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শিবলী সাদী বলেন, ‘প্রশাসনের অভিযোগ ছিল আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করছি না। তাদের দাবি ছিল একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে নিলে সিন্ডিকেট সভাসহ বাদ বাকি প্রক্রিয়া আগাবে। আমরা গত ৮ সেপ্টেম্বর ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার সময় কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি কিছু শর্তসাপেক্ষে। আমরা প্রশাসনকে কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়েছি। কিন্তু কথা ছিল ৮ সেপ্টেম্বর রাতের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদেরকে সিদ্ধান্ত জানাবে। কবে সিন্ডিকেট মিটিং হবে, টেকনিক্যাল বিষয় কিভাবে আগাবে এসব জানানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন দিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসন থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানান, আলোচনা চলছে এখনো কমপ্লিট সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। আমরা জানছি না কী কারণে প্রশাসন সিদ্ধান্তহীনতায় আছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন জটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।'

এ সময় পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, ‘প্রশাসনের সঙ্গে চলমান সংকট উত্তরণে আমরা কয়েক দফা বৈঠক করেছি। সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বরে ৬টি প্রস্তাবনা দিয়েছি প্রশাসনকে। প্রস্তাবনার ২ নং ও ৬ নং দাবি মানার সাপেক্ষে আমরা কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি মেনে নিয়েছি। প্রশাসন আমাদের জানায় একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত না মানলে সিন্ডিকেট মিটিং হবে না। এদিকে অন্য অনুষদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে আমরা  বহিরাগতদের বিষয়ে কথা বলছি না কেন? আমাদের দেওয়া প্রস্তাবনায় ২ নং এ আছে বহিরাগতদের বিচারকার্য দৃশ্যমান করতে, বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিটি প্রবেশপথে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু তিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও প্রশাসন থেকে কোনো বার্তা আমাদের নিকট আসেনি।’

প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগস্ট কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলায় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ ১৫ জন আহত হন। এ ঘটনার পর বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে রাত সাড়ে নয়টায় অনলাইনে জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থানরত সব ছাত্র-ছাত্রীকে ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রদান করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ