সেবাই নিরাপত্তাকর্মীদের বর্ষবরণ উৎসব
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:০৮ PM , আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:০৮ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে ১৪২৬ বাংলা নববর্ষ। সকাল থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা, র্যালিতে এবং সেজেগুজে আসা কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীসহ সকল শ্রেণীর মানুষের পদচারণায় যখন মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, ঠিক তখন থেকেই উৎসবে আসা মানুষগুলোর নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেছেন পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলায় নিয়োজিত সদস্যরা।
সকাল ৭ টায় শুরু হয়েছে নিরাপত্তাকর্মীদের দায়িত্ব। রাত অবধি চলবে সেটা। নির্দিষ্ট কোনো এক ছাউনির নিচে সারাদিন এভাবেই দায়িত্ব পালন করবেন তারা। আবার আরেকটা শ্রেণীর মানুষ আছে, যারা সকাল থেকে ঘুরেফিরে উদযাপন করে একটা সময় ক্লান্ত হয়। কেউ ঠাণ্ডা পানিতে, কেউ লেবুর শরবত কিংবা নানান পদের জুসের ছোঁয়ায় নিজেদের তৃষ্ণা মেটায়। কেউবা আবার কোথাও একটু বিশ্রামে গিয়ে আবারও তৈরি হচ্ছেন রাতের আনন্দের জন্য। শুধু নিরাপত্তা কর্মীদের সকাল থেকেই দেখা গিয়েছিল কোথাও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন, আবার কোথাও সতর্কতার সাথে অবস্থান করছেন। নিজ নিজ জায়গায় অবস্থান করে সারাদিন নজর রেখেছেন মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে কিনা সেদিকে। তারা একেকজন পুলিশ, একেকজন নিরাপত্তাকর্মী।
দিন শেষে পরিবার পরিজনদের সাথে তাদেরও নববর্ষ উদযাপনের ইচ্ছা জাগে। তাদেরও ইচ্ছা হয় নববর্ষের রংবেরঙের জামা গায়ে বর্ষবরণকে স্মরণীয় করে রাখতে। কিন্তু দায়িত্ব আর দায়বদ্ধতা থেকে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন মানুষের কল্যাণে, মানুষের নিরাপত্তায়। তাই সারাদিনের উদযাপন শেষে নিরাপদে বাসায় ফিরে তাদেরকেও একবার কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করা উচিৎ।
হাটহাজারি থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীরের সঙ্গে নববর্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়ে কথা হচ্ছিল। তিনি জানান, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ থেকে পাঁচশ পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে নববর্ষ উপলক্ষে মোতায়েন করা হয়েছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল ক্যাম্পাস। বৈশাখ উদযাপনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নিরাপদ ও উপযুক্ত স্থান। তাই দর্শনার্থীর সংখ্যাও কম নয়। এখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকাল ৭টা থেকে সারাদিন নিরবচ্ছিন্ন ভাবে দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ প্রশাসন।
ওসি আরো জানান, আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সর্বমোট ৩৭টি পয়েন্টে আমাদের নিরাপত্তাকর্মীরা অবস্থানরত রয়েছেন। পাশাপাশি প্রচণ্ড গরমে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এবং শহিদ আব্দুর রব হলের মাঠে মূল অনুষ্ঠান স্থলে বিনামূল্যে দুটি সুপেয় পানির ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার লিটার পানি মজুদ রাখা আছে। সারাদিন ক্লান্ত মানুষের এই সেবা দিতে পেরে আমরা সত্যি আনন্দিত। এছাড়া যেকোনো সহযোগিতায় জন্য আমরা শহীদ মিনারের সম্মুখে এবং শহিদ আব্দুর রব হলের নিকটে দুটি হেল্প ডেস্কও বসিয়েছি। সর্বোপরি দিনভর নববর্ষ উদযাপন যেমন উৎসবমুখর ছিলো, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল শতভাগ শান্তিপূর্ণ।