জবি শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি
শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি  © টিডিসি সম্পাদিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। একই সঙ্গে তারা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে চলমান আন্দোলনে রাষ্ট্রের দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আবাসন বৃত্তির বরাদ্দ অনুমোদন, জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্প পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন এবং বাস্তবায়নের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ মে (মঙ্গলবার) ইউজিসির সাথে এক সভায় আশানুরূপ ফল না পেয়ে শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশে লংমার্চের ঘোষণা দেয়।

লংমার্চ চলাকালে শিক্ষার্থীদের মিছিল মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলে এবং লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী এবং কয়েকজন শিক্ষক আহত হন।

পরে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদের সামনের মোড়ে অবস্থান কর্মসূচিতে যান। রাতের দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জবির শিক্ষক-প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ সময় একজন শিক্ষার্থী একটি প্লাস্টিকের পানির বোতল ছুড়ে মারলে তা মাহফুজ আলমের মাথায় লাগে, এবং তিনি স্থান ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

রাতে টহলরত পুলিশ সদস্যদের সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিতে দেখা যায় বলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যদিও পরবর্তীতে কোনো সহিংসতা হয়নি। তবে শিক্ষার্থীরা এখনো কাকরাইলে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা দেখেছি কীভাবে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে শিক্ষার্থী ও জনগণ ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছে। এর সাথে রয়েছে শিক্ষার্থী-জনতার মৌলিক অধিকারের প্রতি স্পষ্ট উপেক্ষা।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হবে এবং রাষ্ট্রীয় জুলুম-নিপীড়নের অবসান ঘটবে। কিন্তু জবি শিক্ষার্থীদের প্রতি চলমান দমন-পীড়ন সে আকাঙ্ক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।”

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে চার দফা দাবি উত্থাপন করেছে। দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের জীবনের নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের তিন দফা দাবি দ্রুত মেনে নিতে হবে এবং তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে, পুলিশি হামলায় আহত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক আরও জানিয়েছে, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কোনো অবস্থাতেই সেই নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা চলবে না।


সর্বশেষ সংবাদ