তিতুমীর কলেজে পাঠকক্ষ থাকলেও নেই পাঠক
- তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩২ PM , আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫, ০৪:৩৮ PM
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে শহীদ বরকত মিলনায়তনের প্রবেশপথে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পাঠকক্ষ স্থাপন করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা কার্যত পাঠকশূন্য ও অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ধুলোমাখা কয়েকটি টেবিল ছাড়া নেই কোনো বসার ব্যবস্থা। অধিকাংশ সময়ই পাঠকক্ষটি বন্ধ থাকে, খোলা থাকলেও পাঠকের দেখা মেলে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শহীদ বরকত মিলনায়তনের প্রবেশপথে থাকা পাঠকক্ষটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। বসার জন্য নেই কোনো চেয়ার বা বেঞ্চ, চারপাশে জমে আছে ধুলা। পাঠদানের উপযোগী পরিবেশ না থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ একেবারেই নেই।
কলেজটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান মোল্লা বলেন, “পাঠকক্ষে পড়ার মতো পরিবেশ নেই। নিরিবিলি পরিবেশ ছাড়া মনোযোগ ধরে রাখা সম্ভব না। আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাঠকক্ষ করা হলেও সে সময় আমরা এর অবস্থান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি।”
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আলফাজুর রহমান তুর্য বলেন, “কলেজের সবচেয়ে ব্যস্ত জায়গা শহিদ মামুন চত্বরের পাশেই পাঠকক্ষটি স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে শব্দের কারণে মনোযোগ ধরে রাখা অসম্ভব। পাঠকক্ষ নিরিবিলি কোনো জায়গায় স্থানান্তর করা উচিত।”
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর পাঠকক্ষটি উদ্বোধনের সময়ই শিক্ষার্থীরা এর অবস্থান নিয়ে আপত্তি জানান। তৎকালীন অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের মত উপেক্ষা করে মিলনায়তনের প্রবেশপথেই পাঠকক্ষটি স্থাপন করেন।
লাইব্রেরি কমিটির প্রধান ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দিলসাদ জেসমিন বলেন, “আমরা বারবার বেঞ্চ সাজিয়ে রাখলেও শিক্ষার্থীরা সেগুলো বাইরে নিয়ে যায়। পাঠকক্ষে কোনো বই থাকবে না—শুধু পড়াশোনার জন্য নিরিবিলি পরিবেশ তৈরি করতেই এটি স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেটি সঠিকভাবে ব্যবহার করছে না।”
স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরাও চেষ্টা করেছি, কিন্তু কলেজে কোনো রুম খালি নেই; সব রুম বিভিন্ন বিভাগের অধীনে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।”
অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমেদ বলেন, “পাঠকক্ষের বেঞ্চ শিক্ষার্থীরা বাইরে নিয়ে যায়। এ কারণে পাঠকক্ষ খালি পড়ে থাকে। শিগগিরই এটি দেখভালের জন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।”
শিক্ষার্থীরা বলছেন, পাঠকক্ষ থাকার পরও পড়াশোনার মতো পরিবেশ না থাকায় এটি কেবল কাগুজে উদ্যোগেই সীমাবদ্ধ। তারা অবিলম্বে পাঠকক্ষ স্থানান্তর ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।