সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করলেন বেরোবির বিতর্কিত সেই শিক্ষক

অধ্যাপক ড. আপেল মাহমুদ
অধ্যাপক ড. আপেল মাহমুদ  © টিডিসি সম্পাদিত

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শহীদ আবু সাঈদ বই মেলায় নীল দলের সাবেক  সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আপেল মাহমুদ পদত্যাগ করেছেন। তবে বইমেলার কমিটির থেকে পদত্যাগ করলেও যানবাহন কেনাকাটা কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সহ একাধিক কমিটিতে এখনো রয়েছেন তিনি। প্রশাসনের সকল পদ থেকে পদত্যাগ দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

শহীদ আবু সাঈদ বইমেলার দায়িত্বে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক, এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হলে, এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, বিকেলে শহীদ আবু সাঈদ বইমেলা থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন ড. আপেল মাহমুদ।

সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কট্টোর আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ড. আপেল মাহমুদ ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ক্যাম্পাসে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েই ২০১৪ সালে  নীলদল  প্রতিষ্ঠা করে নিজেই সভাপতি হন।  এর পর  হয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে রয়েছেন কার্যকরী সদস্য পদে। এছাড়াও নীল দলের প্যানলে থেকে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ২০২৩ সালে জয়লাভ ও করেন তিনি।

২০২৪ সালে হাসিনার পাতানো নির্বাচনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই শিক্ষকের নেতৃত্বে আওয়ামীলিগের পক্ষে গঠিত নির্বাচনী টিমের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন আপেল মাহমুদ। এছাড়া ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে ভোট ক্যাম্পেইনে ও অংশগ্রহণ করেছিলেন বিতর্কিত এই শিক্ষক।

বিগত আওয়ামী প্রশাসনের আমলে ছিলেন প্রশাসনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে। শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের অভিযোগ, আপেল মাহমুদ ভোল পাল্টে এখন প্রশাসনের কাছের হওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রত্যেক ভিসির আমলে শুরুর দিকে তিনি ভিসির সাথে থাকেন, কিন্তু সুবিধা না করতে পেরে শেষের দিকে ভিসি বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন তিনি। জুলাই আন্দোলনে হামলাকারী আওয়ামীপন্থী একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে এসকল শিক্ষকের ছত্রছায়ায় এখন পর্যন্ত কোন বিচারই শুরু করেনি প্রশাসন। 

অভিযোগ রয়েছে, এ শিক্ষকের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা ও আবু সাইদ হত্যা মামলায় বহিষ্কৃত পলাতক আসামি মো. রফিউল হাসান রাসেল রংপুরের গণেশপুরের রুহুল আমিন নামের এক ব্যবসায়ীর দোকান বন্ধ করে দেন এবং তার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, উপাচার্যের দপ্তরে কোন জরুরি প্রয়োজনে যখনই গিয়েছেন তখনই ড. আপেল মাহমুদকে উপাচার্যের দপ্তরে বসে থাকতে দেখেছেন। একাধিক বিএনপি পন্থী শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের উগ্র আওয়ামীপন্থী ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের ভিসির দপ্তরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন তারা।

উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী বলেন, এ ধরনের কোন লোককে ভবিষ্যতে আমরা আর প্রশাসনের কোন কমিটিতে রাখবো না।


সর্বশেষ সংবাদ