পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগ নেত্রীকে পাসে জড়িত থাকা এক শিক্ষককে অব্যাহতি
- বেরোবি প্রদায়ক
- প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২২ PM , আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০২:০৩ PM
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীকে পরীক্ষা না দিয়ে পাস হওয়ার অভিযোগে ওই বিভাগের প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি, ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অর্থ ও হিসাব পরিচালকের পদে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শাহজামান। একই সঙ্গে ড. রুহুল আমিনকে আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়কের দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার স্থলে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমানকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের কমিউনিটিভ আলজেবরা (বিষয় কোড: ৫১০২) কোর্সের মিড টার্ম পরীক্ষায় অংশ নেননি। তবে পরীক্ষায় না বসেও তাঁর ধারাবাহিক মূল্যায়নে ২১ নম্বর পাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী ঐশী ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন এবং ওই ঘটনার পর থেকে তিনি ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, ঐশীর মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের বেশিরভাগ পরীক্ষা জুলাই বিপ্লবের আগেই সম্পন্ন হয়েছিল। তবে ড. রুহুল আমিনের কোর্সের মিড টার্ম পরীক্ষা বাকি ছিল। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকার পরও ঐশী কীভাবে পরীক্ষায় পাশ করলেন, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী ১৬ জুলাই ক্যাম্পাসে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ঐ ঘটনায় ছাত্রদের ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং শহীদ আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডে নিষিদ্ধ সংগঠনের পরোক্ষ মদদ থাকার অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে জানানো হয়, এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হাসিবুর রহমান বলেন, আমরা অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। শিক্ষার্থী যদি অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকে এবং কোনো শিক্ষক এতে সহযোগিতা করে থাকেন, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।