ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে আটক ছাত্রলীগের দুই নেতা

আটক ছাত্রলীগ নেতা
আটক ছাত্রলীগ নেতা   © টিডিসি ফটো

পরীক্ষা দিতে এসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা আটক হয়েছেন। তারা হচ্ছেন শাখা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শাহিন পাশা ও নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন। আজ বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিতে এলে এ ঘটনা ঘটে। 

পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাত থেকে ছাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সহ-সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, পরিবহণ প্রশাসক ও বিভাগের শিক্ষকরা তাদের ইবি থানায় সোপর্দ করে। 

জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই অভিযুক্ত দুই নেতা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের হুমকি ধামকি এবং আন্দোলনে যেতে বাধা প্রদান করে। এছাড়া ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তারা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাদের বয়কটের ঘোষণাও দেওয়া হয়। আন্দোলন শেষে ক্যাম্পাসের শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে সেমিস্টার পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়। তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে এলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে। পরীক্ষা শেষে বের হতে নিলে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের রোষানলে পড়ে তারা৷ 

ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবেমাত্র কাজ শুরু করেছে৷ যেহেতু একটা গণবিপ্লব হয়েছে, ছাত্রলীগের দ্বারা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় নির্যাতিত হয়েছে তাই তাদের উপর শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। তারা যদি আমাদের অবগত করে পরীক্ষা দিতে আসতো তাহলে আমরা অন্য ব্যবস্থা নিতাম কিন্তু তারা আমাদের জানায়নি। এ অবস্থায়, আমরা প্রক্টর, পরিবহণ প্রশাসক, বিভাগের সভাপতি, অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক এবং বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সহায়তায় দুজনকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের রোষানল থেকে রক্ষা করে থানায় দিয়ে এসেছি। তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পেলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

নবনিযুক্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, আমি মাত্র নিয়োগ পেয়েছি, এখনো দায়িত্ব বুঝে পাইনি। এর মধ্যে দুপুরের দিকে আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি আমাকে ফোন দেন যে তার বিভাগের ছাত্রলীগের পদধারী দুজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এসে জনরোষের মুখে পড়েছে। খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক সেখানে ছুটে যাই। পরের ছাত্র-উপদেষ্টা, পরিবহণ প্রশাসক, বিভাগের সভাপতি ও অন্যান্য শিক্ষকদের সহযোগিতায় তাকে নিরাপদে ক্যাম্পাস থেকে বের করে পুলিশি হেফাজতে দিয়ে আসি। তাদের জনরোষের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে আমি নিজে বুকে আঘাত পেয়েছি। 

ইবি থানার ওসি মামুন রহমান বলেন, দুইজন ছাত্রলীগ পদধারী শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আটক করে। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদেরকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে নিয়ে আসে। আমরা গ্রহণ করেছি। আমাদের ডেটাবেইসে যদি তাদের নামে কোনো অভিযোগ থাকে সেক্ষেত্রে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। 


সর্বশেষ সংবাদ