পরীক্ষা দিতে এসে আটক ছাত্রলীগের ৩ নেতাকর্মী, পার পেলেন ক্ষমা চেয়ে

আটক হওয়া তিন শিক্ষার্থী
আটক হওয়া তিন শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) পরীক্ষা দিতে এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের ৩ নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতন, জুলুম এবং বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ভেটেরিনারি অনুষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষার্থীদের তোপের শিকার হওয়া ছাত্রলীগের তিনজন নেতা-কর্মী হলেন- বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের সভাপতি পদপ্রার্থী রাহিমুল ইসলাম শুভ, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সাবেক উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ওয়াসি-উজ জামান সোহাগ, এবং বেগম রোকেয়া হলের ছাত্রলীগ কর্মী ও বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তানজিলা মোবাশ্বেরা স্বর্ণালী।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের ওই ৩ জনই ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী। ওইদিন তাদের ক্লাস টেস্ট পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষায় অংশ নিতে তারা ক্যাম্পাসে এলে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হন।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে ছাত্রলীগের সোহাগ পরীক্ষা দিতে এলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করেন। পরে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের কাছে তাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। সোহাগ ক্ষমা চাইলে শিক্ষার্থীরা তাকে ছেড়ে দেন। তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন পরীক্ষা শেষে দুপুর ১২টার দিকে রাহিমুল ইসলাম শুভ ও তানজিলা মোবাশ্বেরা স্বর্ণালী তাদের মায়ের সঙ্গে ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলামের কক্ষে আশ্রয় নেন এবং দরজা আটকে দেন। 

তখন অধ্যাপক পূর্বা রুমে ছিলেন না। শিক্ষার্থীরা কক্ষের বাইরে অবস্থান নেন এবং শুভকে বের হতে বলেন। সে সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা এবং প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন শুভকে তার কৃতকর্মের শাস্তি পেতেই হবে এবং ছাত্রলীগের কেউ ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। আগে তাদের বিরুদ্ধে গণতদন্ত হবে, যারা নির্দোষ প্রমাণিত হবে তারাই ক্লাস-পরীক্ষা দিবে। বাকিদের শাস্তি পেতে হবে।

পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে শুভকে প্রক্টরের গাড়িতে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। গাড়িতে ওঠার সময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেন। তবে স্বর্ণালী ও তার মাকে সেসময় ছেড়ে দেয়া হয়।

শুভর বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা জানান, তিনি শিবির বা ছাত্রদল ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়েছেন। একাধিক শিক্ষার্থীকে হয়রানি এবং জুলুমের কারণে হলের শিক্ষার্থীরা তার ওপর ক্ষুব্ধ।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থীরা সোহাগে বিষয়ে বলেন, সে কীভাবে নির্যাতন করেছে হলের সকলেই জানে। আমরা তাকে কিছুই বলি নাই, শুধু মাফ চাওয়ানো হয়েছে। তাকে বুঝানো হয়েছে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নই।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম বলেন, প্রক্টর হিসেবে সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক কাজে এসেছিল। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের উপর ক্ষুব্ধ হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করে আমরা তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেই।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence