নিজ বাড়িতে স্মার্টফোন ব্যবহার না করাসহ যে সাজা ভোগ করছেন কারাদণ্ড পাওয়া জবি শিক্ষার্থী

তিথি সরকার
তিথি সরকার  © সংগৃহীত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ১৩ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয় আদালত। তবে এক বছরের জন্য তাকে প্রবেশনে রাখার কথা হয়। প্রথমবার সাজা ও শিক্ষার্থী বিবেচনায় আদালত তাকে সংশোধনের সুযোগ দিতে কারাগারে না পাঠিয়ে প্রবেশন ব্যবস্থায় পরিবারের কাছে পাঠান।  

একজন সমাজসেবা অফিসারের তত্ত্বাবধানে তিথি এখন পরিবারের সঙ্গে আছেন। তাকে তার বৃদ্ধ বাবার নিয়মিত দেখভাল ও সেবাযত্ন করা, শহর এলাকায় বসবাসের ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন মেনে চলাসহ আইনবহির্ভূতভাবে রাস্তা পার না হওয়া, সামাজিক নিয়মকানুন, প্রথা, রীতিনীতি প্রভৃতি মেনে চলা, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো কাজ না করা, মাদক গ্রহণ না করা, কোনো ধরনের স্মার্টফোন ব্যবহার না করা, জুয়া, তাস, ক্যাসিনো থেকে দূরে থাকাসহ বেশ কিছু শর্ত মানতে হচ্ছে। এক বছরের প্রবেশন শেষে প্রবেশন কর্মকর্তা যদি তিথির আচরণ সন্তোষজনক মর্মে প্রতিবেদন দেন, তবে তার কারাদণ্ড মওকুফ হবে। আর যদি তার আচরণ সন্তোষজনক নয় মর্মে প্রতিবেদন আসে, তবে প্রবেশন বাতিল ও আদালতের দেওয়া দণ্ড তাকে ভোগ করতে হবে।

শুধু তিথি সরকারই নয়, প্রতি মাসে শত শত আসামিকে আদালত কারাগারে না পাঠিয়ে এভাবে শর্তসাপেক্ষে প্রবেশনে পরিবারের কাছে পাঠাচ্ছেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাস পর্যন্ত সারা দেশে প্রবেশনে রয়েছেন ১১ হাজার ১৩৮ আসামি ও শিশু অপরাধী। এসব আসামিকে দ্য প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স-১৯৬০-এর অধীনে প্রবেশনে পাঠানো হয়েছে। 

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে আসছিলেন তিথি সরকার। পরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তিথি সরকারের বহিষ্কার দাবিতে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তিথিকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে সময় তার পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল তিনি নিখোঁজ। এরপর ২০২০ সালের ১১ই নভেম্বর নরসিংদীতে তিথির স্বামী শিপলু মল্লিকের দূর-সম্পর্কীয় চাচা দেবাশীষ রায়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ