ভর্তি পরীক্ষার হলে প্রবেশ না করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন উপাচার্য

বারান্দা দিয়ে পরীক্ষার হল পর্যবেক্ষণ করছেন উপাচার্য
বারান্দা দিয়ে পরীক্ষার হল পর্যবেক্ষণ করছেন উপাচার্য  © টিডিসি ফটো

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে হলে প্রবেশ না করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। শুক্রবার (৩ মে) ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ও। এ কেন্দ্রে ৮ হাজার ১৩৮ জন ভর্তিচ্ছু অংশ নিয়েছেন।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে কোনো কক্ষে প্রত্যবেক্ষক ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করেননি। উপাচার্য নিজেও বারান্দা দিয়ে পরীক্ষার হল পর্যবেক্ষণ করেছেন, কক্ষে প্রবেশ করেননি। এ যেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত!

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপাচার্যসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরাট বহর পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলে পরীক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হয়। এতে তাদের সঠিক উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারটি অনুধাবন করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গুচ্ছের বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষাতেও হলরুমে প্রবেশ করেননি।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসা এক ভর্তিচ্ছু বলেন, উপাচার্য স্যারের এই সিদ্ধান্ত ভর্তিচ্ছুদের জন্য খুবই কার্যকর ছিল। পরীক্ষার হলে উপাচার্য স্যারসহ ক্যামেরা এবং অন্যান্য ডিভাইস নিয়ে অনেক লোক প্রবেশ করলে আমরা হকচকিয়ে যাই। এতে বেশ কয়েক মিনিট সময় নষ্ট হয়।

হল পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে অত্যন্ত আনন্দঘন ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা একটি কেন্দ্র হিসেবে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে সকলের আস্থার জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। বিশেষ করে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের যেন একটি সেকেন্ডও নষ্ট না হয় সেজন্য আমরা ভিজিল্যান্স টিমের কোনো সদস্যই আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করিনি।

এদিকে, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ লাঘবে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিভিন্ন ক্রিয়াশীল সংগঠন এবং বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় এসোসিয়েশনগুলো। তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে অভিভাবকদের জন্য দুটি বিশ্রামস্থলের ব্যবস্থা করা হয়, যেখানে সুপেয় পানিরও ব্যবস্থা ছিল।

এছাড়া স্বেচ্ছাসেবী দলের সার্বিক সহযোগিতায় পরীক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করানো, পার্কিং-এর স্থান সুসজ্জিত রাখা, রাস্তার যানজট নিয়ন্ত্রণ ও আগত অতিথিদের সহায়তাও করা হয়েছে।

এছাড়াও ছাত্রলীগের উদ‍্যোগে শিক্ষার্থীদের মোবাইল, ব‍্যাগ, ঘড়িসহ অন‍্যান‍্য সামগ্রী সংরক্ষণের জন্য নজরুল ভাস্কর্য ও অগ্নি-বীণা হলের সামনে দুটি শিক্ষার্থী সহায়তা ও তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বিলম্বে আসা শিক্ষার্থীদেরকে দ্রুত হলে পৌঁছে দিতে ছিল জয় বাংলা বাইক সার্ভিস। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে কলম, অভিভাবকদের বৃক্ষের চারা উপহার ও তাপপ্রবাহে সতর্কতামূলক লিফলেট বিতরণ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।


সর্বশেষ সংবাদ