ছাত্ররাজনীতি নেই যে ৪ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে

দেশের ইতিহাসে ছাত্র রাজনীতির বিশেষ অবদান রয়েছে
দেশের ইতিহাসে ছাত্র রাজনীতির বিশেষ অবদান রয়েছে  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এর মধ্যে কথা উঠছে ক্যাম্পাসটিতে রাজনীতি থাকা না থাকার সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে। রাজনৈতিক এই আলোচনা-সমালোচনা থেকে মুক্ত সরকারি চার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া সদ্য প্রতিষ্ঠিত কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ছাত্র রাজনীতি ভীত গড়ে ওঠেনি।

১৯৯১ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়, রাজনীতির নামে মারামারি, লাশের মিছিল তারা চান না। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ওঠে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি।

তৎকালীন উপাচার্য ড. গোলাম রহমান শিক্ষার্থীদের এ দাবিকে মেনে নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম রাজনীতি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা। এছাড়া সামরিক বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বাকি তিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রাজনীতি মুক্ত।

বিইউপি বাংলাদেশের ৩১তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ২০০৮ সালে ঢাকার মিরপুর সেনানিবাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। যা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস অধ্যাদেশ, ২০০৯ আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ দেশের ৩৭তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় এবং বিশ্বের ১২তম মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়। নীল অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি) অর্জনের লক্ষ্যে মেরিটাইম বিষয়ক উচ্চতর পড়াশুনার জন্য প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রথম ‘বিশেষায়িত’ বিশ্ববিদ্যালয় এটি। 

এখান থেকে মেরিন ক্যাডেটদের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ‘ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সায়েন্স’ ডিগ্রি দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে মেরিন ও মেরিটাইম সংশ্লিষ্ট উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাভিয়েশন সংক্রান্ত বাংলাদেশের একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি আকাশ বিজ্ঞান প্রকৌশল সম্পর্কিত বাংলাদেশের প্রথম উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকার আশকোনায় ১১ একর জমির উপর অস্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর এই অস্থায়ী ক্যাম্পাসটি পুরাতন তেজগাঁও বিমানবন্দরের পাশে স্থানান্তরিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস লালমনিরহাটে। গত ২৬ জুন ২০২২ হতে লালমনিরহাটে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্নাতক (সম্মান) শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

রাজনীতি না থাকলেও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পেয়ে আসছে নেতৃত্বদানের সুযোগ। রাজনীতি না থাকায় বিভিন্ন কারণে সেশন জটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে না শিক্ষার্থীদের। অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যথাসময়ে ক্লাস-পরীক্ষা এবং ফল প্রকাশিত হচ্ছে। হলের সিট পাওয়া থেকে শুরু করে যেকোনো সুবিধা নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি না থাকার বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দ ফাহিম শাহরিয়ার রক্তিম বলেন, নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্রে ক্যাম্পাস রাজনীতি বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে বাংলাদেশে বর্তমান লেজুড়বৃত্তিক ও অসহিংসতার রাজনীতি এর সঙ্গে কোনো প্রাসঙ্গিকতা রাখে না।

তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসব অসুস্থ রাজনীতির চর্চা থেকে মুক্ত রয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বদা সুসম্পর্ক বজায় থাকে। অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে সবাই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দাবি আদায় করেন। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ডাইনিং ও ক্যান্টিনের খাবারের মান অনেক ভালো রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলোর সিট বণ্টনও বৈধভাবে হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence