শিক্ষকদের থাপ্পড়ের হুমকি দিয়ে নিজেই থানায় গেলেন কুবি কর্মকর্তা

মোহাম্মদ জাকির হোসেন
মোহাম্মদ জাকির হোসেন  © টিডিসি ফটো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সদস্য ও সাধারণ শিক্ষকদের থাপ্পড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকির পর সাত শিক্ষকের নামে থানায় অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তিনি ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে কুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, নূর মোহাম্মদ রাজু, মো. কামরুল হাসান, অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, ড. মো. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম ও আলীমুল রাজীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে তিনি লিখেন, আমি মোহাম্মদ জাকির হোসেন দাপ্তরিক কাজে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টায় পূর্ব অনুমতিক্রমে উপাচার্যের কক্ষে গেলে নূর মোহাম্মদ রাজু ও অন্যান্য বিবাদীগণ আমি ও আমার সঙ্গীয় অফিসারদের এখানে কেন এসেছো বলে অশ্লীল গালাগালি ও মারমুখী ভঙ্গিতে আমাদেরকে শারীরিকভাবে নাজেহাল করে। আমাকে ধাক্কা দিয়ে জোর করে উপাচার্য মহোদয়ের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে।

তিনি লিখেন, আমি বলি স্যার আমরা দাপ্তরিক কাজে ভিসি স্যারের কাছে এসেছি। আপনারা আমাদের সাথে এমন আচরণ কেন করছেন? আমরা কি মানুষ নই? পরবর্তীতে ভেতরে থাকা উপরে উল্লিখিত শিক্ষকবৃন্দ আমাদের দিকে তেড়ে এসে টানা হেঁচড়া করে উপাচার্য স্যারের কক্ষ থেকে আমাকে এবং আমার সাথে থাকা পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন স্যারকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে।

ভিসি স্যারের সাথে আমরা কথা বলতে চাইলে উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ আমাদের সাথে আরও বেশি খারাপ আচরণ করেন। উপাচার্য মহোদয়ের কক্ষে বিকট শব্দ ও হট্টগোল শুনে অন্যান্য অফিসারগণ ভিসি স্যারের রুমের সামনে আসেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও উপাচার্যের সহযোগিতায় কোন রকমে আত্মরক্ষা করে বের হয়ে আসি।

উপাচার্য দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার হোসাইন মোর্শেদ ফরহাদ সাথে কথা বলে জানা যায়, ওইদিন উপাচার্যের সাথে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল না। সবই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ঘেটে দেখা যায়, উপাচার্যের কক্ষে শিক্ষকরা অবস্থান নিলে কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়া কয়েকজন কর্মকর্তা ও কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন জাকির। তখন উপাচার্যের কক্ষের দরজায় ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে দেখা যায়। পরে উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করেও প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি, উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ শুরু করলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এসময় শিক্ষকদের সাথে ধাক্কাধাক্কিও করতে দেখা যায় জাকিরকে। পরে তিনি শিক্ষকদের থাপ্পড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। চাকরিপ্রার্থীদের সে সময় শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়।

থানায় অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বা বিধিবদ্ধ সংগঠনগুলো যেন উপাচার্যের অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে না পারে সেজন্যেই উপাচার্য অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে দিয়ে এ অভিযোগ দায়ের করিয়েছেন। না হয় শিক্ষকদের ওপর হামলার পরের দিন হামলাকারী কর্মকর্তাকে নিয়ে নিজ কার্যালয়ে বৈঠক করতেন না।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের ওপর কর্মকর্তা ও সাবেক ছাত্রদের হামলা এবং পরবর্তীতে অভিযোগ দায়েরের সাথে উপাচার্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত। সরকারের উচিত এই মুহূর্তে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেয়া।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence