ছাত্রীকে প্রশ্ন সরবরাহের অভিযোগ জবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

জুয়েল কুমার সাহা
জুয়েল কুমার সাহা  © টিডিসি ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জুয়েল কুমার সাহার নামে এক ছাত্রীকে অনৈতিকভাবে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্ন সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, গত বছর ৪ ডিসেম্বর বিভাগের স্নাতক পর্যায়ের চূড়ান্ত বর্ষের ‘ক্লাসিকাল ইলেকট্রো ডাইনামিকস: ১’ কোর্সের পরীক্ষা চলাকালে হাতে নকল নিয়ে ধরা পড়েন সেই ছাত্রী। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের আটটি সেটের উত্তরই ওই ছাত্রীর কাছে ছিলো। পরে পরীক্ষা হলে অবস্থানরত পরীক্ষক, পরীক্ষা কমিটির সভাপতিসহ বিভাগীয় চেয়ারম্যান এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি প্রশ্ন পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং প্রশ্ন সরবরাহকারী হিসেবে শিক্ষক জুয়েল সাহার নাম বলেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক জুয়েল কুমার সাহা। তিনি বলেন, ‘না এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। এটা ভুল তথ্য।’ 

এইদিকে, পরীক্ষা শেষ হওয়ার দেড় মাস পার হয়ে গেলেও এ বিষয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এমনকি এই বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

বিভাগের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক জুয়েল সাহা বিভাগের স্নাতক পর্যায়ের চূড়ান্ত বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীকে তার নিজের কোর্স ‘ক্লাসিকাল ইলেকট্রো ডাইনামিকস: ১’সহ আরও কয়েকটি কোর্সের অভ্যন্তরীণ প্রশ্ন পরীক্ষার আগে সরবরাহ করেন। 

এ ঘটনায় পরে বিভাগীয় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে ওই শিক্ষককে সকল-ক্লাস পরীক্ষা থেকে ৩ বছরের জন্য মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে তাকে অফিসিয়াল কোনও শাস্তির মুখোমুখি করা হয়নি। এই শাস্তি প্রদানের আগে কয়েক দফা বৈঠকে বসেন শিক্ষকরা।

আরও পড়ুন: স্কুল-কোচিংয়ের রেজাল্ট ভালো করাতে এসএসসির প্রশ্নফাঁস

এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য। আমি, পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে ওই  ছাত্রীর খাতা কেটে দিয়েছি। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই ছাত্রীকে প্রশ্ন সরবরাহের প্রমাণ পেয়েছি। এখানে অনেক কাহিনী আছে। আপনি এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন।’ 

এ বিষয়ে বিভাগে ২য় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কানিজ ফাতেমা কাকলী বলেন, ‘আমি এ নিয়ে ফোনে কথা বলবো না৷’

বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটলে অবশ্যই শাস্তির আওতাভুক্ত হবে। সে ক্ষেত্রে ডিসিপ্লিন কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে অবগত নই। এমন ঘটনা হলে সেটা তো গুরুতর অপরাধ। অভিযোগ এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ