মুচলেকা দিয়ে ফের যৌন হয়রানিতে কুবি ছাত্র
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৮:২৯ AM , আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১০:৪৫ AM
যৌন হয়রানির অভিযোগে মুচলেকা দেওয়ার পর আবারও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) প্রক্টর বরাবর যৌন হয়রানির বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন এক ছাত্রী।
অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানকেও। অভিযুক্ত ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ আল-আমিন।
আবেদনপত্রে অভিযোগকারী বলেন, গত ১১ নভেম্বর মোহাম্মদ আল-আমিন আমাকে ফোন দিয়ে যৌন উদ্দেশ্যমূলক কথা বলেন। তার বিরুদ্ধে ‘যৌন হয়রানিমূলক’ সংবাদ প্রকাশে আমি খুশি হয়েছি মন্তব্য করে আমাকে ও আমার পরিবারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালগালি করে আমাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে পাঁচ সদস্যের কমিটি
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, গত ২০২০ সালে সংশ্লিষ্ট সেমিস্টারের একটি কোর্সে ইনকোর্সের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে (বার্ড) এ্যাটাচমেন্ট প্রোগ্রামের সময় আল-আমিন উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে স্পর্শ করে। তার এমন আচরণের প্রতিবাদ করায় তখনও সে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে এবং অন্যদেরকে না বলতে হুমকি দেয়।
এছাড়া গত ১৪ নভেম্বর ক্লাস চলাকালীন ক্লাসে মোবাইল রেখে ওয়াশরুমে গেলে আল আমিন তার ব্যাগ থেকে মোবাইল নিয়ে বিভিন্ন রকমের চ্যাট ও কল লিস্ট মুছে ফেলে বলেও অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। আমি চাই, এ বিষয়ে প্রশাসন সুষ্ঠু বিচার করুক এবং আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। এর বেশি কিছু বলতে চাইনা।
আল আমিনের বিরুদ্ধে এর আগেও আরও একাধিক নারীকে হেনস্তা করার অভিযোগ আছে। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দশম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, সে অনেকের সাথেই এভাবে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে থাকে। আমার সাথেও একদিন কুরুচিপূর্ণ আচরণ করেছিল। বিষয়টা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আল-আমিন। তিনি বলেন, আমি কাউকে হুমকি দেইনি। এটা মিথ্যা-বানোয়ায়াট। আমি নিশ্চিত একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর(ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমাদের কাছে একটা মেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি বসেছি বিষয়টি নিয়ে। আমরা আগামী দিন অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল বরাবর ফরোয়ার্ড করে দেব।
একই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বারবার একই ধরনের অভিযোগ আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিবে-তা জানার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি প্রতিবেদকের কল রিসিভ করেনি।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত আল-আমিনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল’-এর নিকট লিখিত অভিযোগ দেয় অন্য একজন ছাত্রী। সেসময় অভিযুক্ত আল-আমিন যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের কাছে মুচলেকা দেয় বলে জানায় সেলের সদস্য সচিব ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন রেজোয়ানা।