প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে ইবির সিলগালা দোকান চালু নিয়ে তোড়জোড়

ইবির সিলগালা দোকানটি
ইবির সিলগালা দোকানটি  © টিডিসি ফটো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছয় বছর সিলগালা থাকা ‘ক্যাম্পাস লাইব্রেরি এন্ড ফটোকপি’ দোকানটি খোলা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি দোকানটি চালু করতে তালা ভাঙেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জানতে পারলে নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম এসে দোকানটি বন্ধ করে দেন।

জানা যায়, ‘ক্যাম্পাস লাইব্রেরী এন্ড ফটোকপি’ দোকানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে অবস্থিত। দোকানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মনোজিত কুমার মন্ডলের নামে রেজিষ্ট্রেশন আছে। দোকানটির রেজিট্রেশন নম্বর ১৩৭৫। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ‘এফ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মনোজিতের ছাত্রত্ব বাতিল, দোকান সিলগালাসহ তার বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে দোকানটি বন্ধ রয়েছে। 

তবে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের একটি ফটোস্ট্যাট দোকানের মালিক মনিরুল ইসলাম অনুমতি পত্র ছাড়াই দোকটির তালা ভেঙ্গে ভিতের প্রবেশ করেন। দোকানটি ভিতরের পরিষ্কার-পরিছন্ন করতে সঙ্গে কয়েকজন শ্রমিকও নিয়ে আসেন। জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম এসে দোকান খোলার কারণ জানতে চান। এসময় তাঁর সঙ্গে অনুমতি পত্র না থাকায় বিপাকে পড়েন তিনি। পরে দোকানটি আবারো বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, দোকানটির রেজিষ্ট্রেশন পেতে আমি আবেদন করেছি। আমার নামে রেজিস্ট্রেশন হওয়ার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রক্টর স্যার আমাকে এক সপ্তাহ আগেই দোকানটি চালু করতে বলছিলেন। প্রক্টর স্যারের মৌখিক নির্দেশে গতকাল দোকানটির তালা খোলা হয়। ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ও আমার জন্য সুপারিশ করেছে।

আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীদের স্মারকলিপির পর খুবির ৯ শিক্ষার্থীকে শোকজ

কিন্তু অনুমতি পত্র না থাকায় নিরাপত্তা কর্মকর্তা এসে দোকানটি বন্ধ করতে বলেন। এরপর দোকান বন্ধ করে শ্রমিকদের নিয়ে চলে যায়। এতে আমার আড়াই হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। প্রক্টর স্যার বলেছেন দ্রুতই কাগজ দেবেন। উনি কাগজ দিলেই দোকান চালু করব।

মনোজিত কুমার মন্ডল বলেন, দোকানটি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। আমি দোকানটি চালাতে চাই না। বিষয়টি নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা হয়েছে। তারাই বিষয়টি ডিল করছে। কাকে দিলে ভালো হবে তারাই ঠিক করবেন। দোকান আমার আমার কাছে মূখ্য নয়, আমার চাওয়া সার্টিফিকেট তুলতে পারা।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দোকানটি চালুর জন্য অনুমতি নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কেউ অনুমতি দিলেও জানাতে হবে। অবগত হওয়া মাত্রই দোকানটি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলাম। দোকান অনুমোদন দেওয়া রেজিস্ট্রারের কাজ।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আমি কাউকে সুপারিশ করিনি। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দীর্ঘদিন দোকানটি বন্ধ রয়েছে। এস্টেট অফিস যাকে মনে করবে তাকে দিবে। 

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়কে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ‘এফ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছু পরে এফ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে মনোজিত মন্ডলের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৩তম সিন্ডিকেট সভায় তারা ছাত্রত্ব ও সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বাদী হয়ে মামলা করেন।

একটি সূত্র জানায়, মনোজিত কুমার মন্ডলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি সনদপত্র ও নম্বরপত্র উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করছেন। কাগজ উত্তোলনের জন্য টাকাও জমা দিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence