ভিসির পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়

  © টিডিসি ফটো

ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. কাজী শরিফুল আলমের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে আহছানউল্লাহ্ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অবৈধভাবে পদে থেকে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্বেচ্ছাচারীভাবে পরিচালনা করার অভিযোগ ড. কাজী শরিফুল আলম। এমন অভিযোগ তার পদত্যাগ চাইছেন আন্দোলনকারীরা।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল আবারও আন্দোলন করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভকারীরা জানান, বিভিন্ন সময় নামকরা ও চৌকষ শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয় হতে রিজাইন দিতে বাধ্য করেছেন কাজী শরিফুল আলম। সেমিস্টার ফি বাড়ানোর পরও প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি ও তার চাটুকার কিছু কর্মকর্তার জন্য আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর সুনাম হারাতে বসেছে।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত ভিসি-প্রোভিসি ও কোষাধ্যক্ষ নেই বেসরকারি আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর ভারপ্রাপ্ত বা অনিয়মিত ভিসি কর্তৃক স্বাক্ষরিত অকার্যকর মূল সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য প্রায় আড়াইহাজার গ্র্যাজুয়েটকে ডাকা হয়েছিল ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য ১১তম কনভোকেশনে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সমাবর্তনে আসেননি। সমাবর্তন স্থগিত করা হয়। তখন বিষয়টি আমাদের নজরে আসে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ভিসি আপসরণসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছি। দাবিগুলো হল, অবৈধ ভিসি এতদিন ভার্সিটি থাকা অবস্থায় যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বাতিল করতে হবে, এই অথরিটির অধীনে কোনো ধরনের কার্যক্রম এ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে না, সেমিস্টার ফিয়ের টাকার কি খাতে ব্যায় হচ্ছে তা জানাতে হবে, ল্যাব, ক্লাসরুমের পারিপার্শ্বিক অবস্থা, ওয়াশরুমের হাল, নিরাপত্তার বেহাল দশা, ক্যান্টিনের খাবার ও পরিচ্ছন্নতার মানসহ যেসব ন্যায্য সুযোগ সুবিধা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জবাবদিহি করতে হবে, শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, ক্লিয়ারেন্সের নামে টাকা নেয়া বাতিল করতে হবে, তাছাড়া ক্যারি ক্লিয়ারেন্সে সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৩ দশমিক ০০ করতে হবে, এতদিন ধরে করে আসা সব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জবাব শিক্ষার্থীদের দিতে হবে।

কনভোকেশন বাতিলসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বহুদিন ধরে জমাট ক্ষোভ আন্দোলনে রূপ নিয়েছে বলেই মনে করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের একাত্মতা ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। বেশ কয়েকজন সাবেক সদস্য যোগ দিয়েছেন আন্দোলনে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আগামীকাল সকাল ১০টায় আমরা আবার ভার্সিটিতে জড়ো হবো। আমাদের উপর এতদিনের অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো।

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর আহছানউল্লাহর ভারপ্রাপ্ত ভিসি স্বাক্ষরিত অকার্যকর সনদের কনভোকেশনের খবরে ক্ষোভে ফেটে পরে গ্র্যাজুয়েটরা। চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত ভিসি-প্রোভিসি ও কোষাধ্যক্ষ নেই বেসরকারি আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর ভারপ্রাপ্ত বা অনিয়মিত ভিসি কর্তৃক স্বাক্ষরিত অকার্যকর মূল সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য প্রায় আড়াইহাজার গ্র্যাজুয়েটকে ডাকা হয়েছিল ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য ১১তম কনভোকেশনে। ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা এড়াতে বৈধ ভিসি নিযুক্তির পর এসব গ্র্যাজুয়েটদের ফের সনদ নিতে হবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত না হলে ভিসি-প্রোভিসি ও কোষাধ্যক্ষরা অবৈধ বা বিধি মোতাবেক নিযুক্ত নন। আর ভারপ্রাপ্ত ভিসি থাকা অবস্থায় কনভোকেশন করতে পারেন না এবং মূল সনদে স্বাক্ষর করতে পারেন না।


সর্বশেষ সংবাদ