বিইউবিটিতে সম্পন্ন হল জাতীয় পর্যায়ের ‘ইনোভেটএক্স হ্যাকাথন ২০২৫’

ইনোভেটএক্স হ্যাকাথন-২০২৫ এ প্রতিযোগিরা
ইনোভেটএক্স হ্যাকাথন-২০২৫ এ প্রতিযোগিরা  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় পর্যায়ের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা ‘ইনোভেটএক্স হ্যাকাথন ২০২৫’। দেশজুড়ে প্রযুক্তি-বিষয়ক চর্চা ও উদ্ভাবনকে আরও গতিশীল করার উদ্দেশ্যে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতাটি ব্যাপক সাড়া ফেলে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) প্রোগ্রামিং হিরোর সহযোগিতায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বিইউবিটি আইটি ক্লাব। প্রতিযোগিতাটি দেশের তরুণ প্রযুক্তিপ্রেমী, উদ্ভাবক এবং ভবিষ্যৎ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের এক বৃহৎ মঞ্চে একত্রিত করেছে।

এবারের হ্যাকাথনে দেশের ৬৪টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৭৩টি দল অংশগ্রহণ করে, যা সাম্প্রতিক সময়ে কোনও একক হ্যাকাথনে অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম সংখ্যা। অংশগ্রহণকারীরা টানা ১২ ঘণ্টার অন-সাইট কোডিং চ্যালেঞ্জে বিভিন্ন বাস্তব সমস্যার প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান তৈরিতে প্রতিযোগিতা করেন। পুরো ইভেন্টটি ছিল অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক, যেখানে উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট দক্ষতা, সমস্যা বিশ্লেষণ ক্ষমতা এবং দলগত সমন্বয় ছিল প্রধান মূল্যায়ন মানদণ্ড।

প্রতিযোগিতায় উপস্থাপিত সকল প্রজেক্টই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) ভিত্তিক হওয়ায় শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকর সমাধান উপস্থাপনের সুযোগ পেয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার, নারীর ক্ষমতায়ন, সাইবার নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তরুণরা চমৎকার উদ্ভাবন উপস্থাপন করেন।

কঠোর মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শেষে তিনটি শ্রেষ্ঠ দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় এবং মোট ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়। বিচাররা জানান, অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রস্তাবিত সমাধানগুলো প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ, বাস্তবসম্মত এবং সৃজনশীলতার চমৎকার উদাহরণ ছিল।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিইউবিটি রিসার্চ স্কুলের ডিন ড. মুহাম্মদ আমিনুর রহমান। তারা তাদের বক্তব্যে তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় পর্যায়ে এ ধরনের সুযোগ সৃষ্টির গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অতিথিরা বলেন, বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাত এগিয়ে নিতে এমন উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি তারা শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহিত করা, নতুন দক্ষতা অর্জন এবং প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক মান অর্জনের পরামর্শ প্রদান করেন।

ইভেন্টটিতে বিইউবিটির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন এবং অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পাশে থেকে পরামর্শ প্রদান ও উৎসাহব্যঞ্জক ভূমিকা পালন করেন। আয়োজক কমিটির সদস্যরা জানান, এ ধরনের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে, প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ সম্পর্কে ধারণা দেয় এবং তাদের পেশাগত জীবনের জন্য প্রস্তুত করে।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অংশগ্রহণকারীরা জানান, ‘ইনোভেটএক্স হ্যাকাথন ২০২৫’ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা, যা তাদের নতুন কিছু শেখার, দক্ষতা প্রদর্শনের ও নিজের সক্ষমতা যাচাইয়ের সুযোগ দিয়েছে। তাদের মতে, এ ধরনের প্রতিযোগিতা দেশে প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবন চর্চাকে আরও গতিশীল করবে।

ইনোভেটএক্স হ্যাকাথন ২০২৫ প্রমাণ করেছে যে প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মই বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট, কারিগরি-সমৃদ্ধ ও উন্নত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নেবে।


সর্বশেষ সংবাদ