ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি একশ’ শিক্ষার্থীর ৮ জন পড়েন বিনা খরচে

শিক্ষাবৃত্তিতে বার্ষিক খরচ ১৩ কোটি টাকার বেশি

ইউআইইউ ক্যাম্পাস
ইউআইইউ ক্যাম্পাস  © টিডিসি ফটো

দেশের উচ্চশিক্ষা কাঠামোতে অপেক্ষাকৃত কম খরচে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পান পাবলিক বা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সিংহভাগ কলেজে টিউশন ফি কম হলেও শিক্ষার মানে ও দক্ষতা উন্নয়নে সেগুলো অনেকটাই পেছনে। এমন প্রেক্ষাপটে তুলনামূলক ভালো মানের শিক্ষার জন্য সামনের সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা বাড়ছে। আগ্রহ বাড়ছে অভিভাবকদেরও।

তবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি খরচের কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আশা ছেড়ে দেন সুবিধাবঞ্চিত বা দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা। এমন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা এগিয়ে নিতে এবং মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করতে এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)। প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চশিক্ষালয়টিতে বিনা খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। এ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এবং এর পেছনে আর্থিক খরচ নেহাৎ কম নয়। 

আরও পড়ুন: স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার সনদ পেল ইউআইইউ

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে দেড় শতাধিক ছাত্রছাত্রী বিনা খরচে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন যা ইউআইইউর মোট শিক্ষার্থীর তিন শতাংশ। এর পেছনে গত বছর প্রতিষ্ঠানটি ব্যয় করেছে ১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এই বার্ষিক শিক্ষাবৃত্তির পরিমাণ আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি অফিস সূত্রে জানা গেছে। এর বাইরেও নানা ধরনের বৃত্তির মাধ্যমে শিক্ষাব্যয় কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। 

২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) দেশে উচ্চশিক্ষার গুণগত মান রক্ষায় অগ্রণী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইতিমধ্যে অনেকের আস্থা অর্জন করেছে। বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আরও পড়ুন: ইউআইইউ’র নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম মিয়া

এছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্যও রয়েছে বিনা খরচে পড়াশোনার সুযোগ। জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও মোট আসনের তিন শতাংশ সংরক্ষিত রেখেছে ইউআইইউ। প্রতিষ্ঠানটির এ স্কলারশিপের মাধ্যমে বিনা খরচে চার বছরের স্নাতক শেষ করার সুযোগ পান শিক্ষার্থীরা। এটিকে বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনন্য উদ্যোগ বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। 

সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব সবার জানিয়ে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য যদি আমরা উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে পারি তাহলে শিক্ষার্থীরা নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি জানান, বাংলাদেশের ২৪০টি থানার দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে পড়ার সুযোগ রয়েছে ইউআইইউতে। 

আরও পড়ুন: ইউআইইউর ‘ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব-স্মার্ট ইউনিবেটর’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া বলেন, আমরা বিভিন্ন বৃত্তি ও মেধাবৃত্তির পাশাপাশি মেধাবী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে খণ্ডকালীন চাকরি নিশ্চিত করতে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট (আরএ) হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সাধারণত পিএইচডির শিক্ষার্থীরা রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে থাকে। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু পিএইচডি নেই, তাই গবেষণায় আগ্রহী স্নাতকের মেধাবী শিক্ষার্থীদের আরএ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে। এতে একজন শিক্ষার্থী গবেষণায় দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা আয়ের সুযোগ পাবে বলেও জানান ইউআইইউ উপাচার্য।

May be an image of skyscraper and grass

বর্তমানে ইউআইইউতে প্রত্যন্ত ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের শিক্ষার্থী এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের বাইরেও রয়েছে বেশকিছু মেধাভিত্তিক স্কলারশিপের সুযোগ। উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ২৫ শতাংশ এবং গোল্ডেন জিপিএ-৫ প্রাপ্তরা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত টিউশন ফি ছাড় পাবেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে ২৫ থেকে শতভাগ পর্যন্ত টিউশন ফি ছাড় পাবেন ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা। তবে সেজন্য ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের ‘ও’ লেভেলে ন্যূনতম ৪টি ‘এ’ থাকতে হবে। শতভাগ স্কলারশিপের জন্য একই লেভেলের শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে ৫টি ‘এ’। একই সাথে ‘এ’ লেভেলে ১টি ‘এ’ ও ১টি ‘বি’ থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তির ঝুঁলিতে। 

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) ভর্তি-পূর্ব স্কলারশিপের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ পর্যন্ত টিউশন ফি ছাড়েরও সুযোগ আছে। প্রতি সেমিস্টারে চূড়ান্ত ফলাফলের (ফাইনাল রেজাল্ট) ওপর ভিত্তি করে ২৫ থেকে শতভাগ টিউশন ফি ছাড় পান শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির মোট বিদ্যার্থীর ১০ শতাংশকে দেয়া এ সুযোগের আর্থিক পরিমাণও বার্ষিক প্রায় ১২-১৩ কোটি টাকা। 

এসবের বাইরে বেসরকারি এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ভাই-বোন, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ভাই-বোন, প্রতিবন্ধী, কর্পোরেট, উপজাতিসহ বিভিন্ন বিবেচনায় বা কোটায় ছাড় ও বৃত্তি পাচ্ছেন। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্যও টিউশন ফি ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।  

আরও পড়ুন: রোভার চ্যালেঞ্জে এশিয়ায় সেরা ইউনাইটেড ইউনিভার্সিটি

বুদ্ধিভিত্তিক প্রচেষ্টায় নিয়োজিত শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে অনুপ্রেরণা দেয় ইউআইইউ। ইন্টারন্যাশনাল ম্যাথ অলিম্পিয়াড, ইন্টারন্যাশনাল ফিজিকস অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন অথবা জাতীয় কলেজ পর্যায়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং কনটেস্টে শীর্ষ ৩০তম স্থান পর্যন্ত অর্জন-থাকা মেধাবীদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে (সিএসই) পড়াশোনায় আগ্রহীরা এ সুযোগ পাচ্ছেন ও পাবেন। এ স্কলারশিপের আওতায় বিভাগটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি ছাড় দেয়া হয় ৭৫ শতাংশ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত। এছাড়াও উচ্চশিক্ষালয়টির শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চশিক্ষাকে আরও সহজতর করতে সুযোগ পাবেন সুদমুক্ত ঋণ গ্রহণেরও। 

মেধাবী অথচ দরিদ্র এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপের সুযোগ রাখা হয়েছে জানিয়ে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) হেড অব অ্যাডমিশন নাজমুল হাসান চৌধুরী বলেন, এখানে মেধাবী অথচ দরিদ্র এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ’র (বিওটি) পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদানও দেওয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থাও রয়েছে। যেখান থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চশিক্ষার পথচলাকে আরও সহজতর করতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ