অন্তর হত্যাকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বলয়ের অনেক বাইরে: ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৫১ PM , আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ১১:২১ PM
ঢাকার অদূরে সাভারের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান অন্তর হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল রবিবার রাতে আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এর একদিন পর আজ সোমবার রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পুরো ঘটনা ও প্রশাসনের বর্তমান অবস্থান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের সমাপনী বর্ষের ছাত্র মোঃ হাসিবুল হাসান (অন্তর) একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, দুর্বৃত্তরা অন্তরকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে আহত করে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বলয়ের অনেক বাইরে। তারপরও, প্রয়াত মোঃ হাসিবুল হাসান (অন্তর) যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য, তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
“বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করার পরেও অন্তরকে তার পরিবার এনাম মেডিকেল হাসপাতাল থেকে তার নিজস্ব এলাকা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্তর ইন্তেকাল করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী জানাযায় অংশগ্রহণ করার জন্য ময়মনসিংহ পৌঁছায়, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ সহযোগিতা করে।”
প্রেস বিজ্ঞপ্তি আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গত শুক্রবার বাদ জুমা প্রয়াত অন্তরের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া করা হয় এবং শনিবার বাদ আসর গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অন্তরের স্মরণে বন্ধ রাখা হয়। একই দিনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন এবং অন্তর হত্যা মামলার আপডেট জানান।
“এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদা সজাগ হয়ে কাজ করছে, ইতিমধ্যে একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ন্যায্য বিচার এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করছে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমাদের সবাইকে মর্মাহত করেছে।”
প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, এ অবস্থায় এলাকার কিছু সন্ত্রাসী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিস্কৃত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে এবং প্রতিবেশীদের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। তারা বিভিন্নভাবে স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে নানারকম গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি আরো অশান্ত করার চেষ্টা করে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির মূল লক্ষ্যই নির্ভুলভাবে প্রতিটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করা এবং যারা এই নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির জন্য দায়ী তাদের খুঁজে বের করা ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
“এ অবস্থায় সাংবাদিক ভাইদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ তারা যেন সোস্যাল মিডিয়ার কোন আনভেরিফায়েড পেজের পোস্ট যাচাই–বাছাই না করে সংবাদ পরিবেশনে বিরত থাকেন এবং গুজবে কান না দিয়ে প্রয়োজনে সঠিক তথ্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সংবাদ পরিবেশন করেন।”