সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ের, বাস্তবায়ন হলে বছরে যত টাকা লাগবে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৬ PM , আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৯ PM
জাতীয় বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা আন্দোলনে রয়েছেন। তাদের এই আন্দোলনের মধ্যেই শনিবার (৮ নভেম্বর) এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সহকারী শিক্ষকেরা যাতে ১১তম গ্রেড পেতে পারেন, সে জন্য তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। বেতন কমিশনকেও (নতুন বেতন কমিশন) জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড দুই ধাপ বাড়িয়ে ১১তম করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে লিখিতভাবে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়। লিখিত প্রস্তাবের ব্যয়ের তথ্যও তুলে ধরা হয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের বর্ধিত গ্রেডে বেতন দিতে বছরে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ৮৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বর্তমানে সহকারী শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে বেতন পান। অন্যদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বর্তমান বেতন গ্রেড ১১তম। সম্প্রতি দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে রিট আবেদনকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বাড়িয়ে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এর ফলে সারা দেশের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড ১০ম হওয়ার পথ তৈরি হয়। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
এর পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে করার বিষয়েও একটি চেষ্টা করা হচ্ছে। এ চেষ্টার উদ্যোগের অংশ হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জাতীয় বেতন স্কেলে ১০তম গ্রেডে শুরুর বেতন ১৬ হাজার টাকা। বেতন গ্রেড ১১তম হলে শুরুতে মূল বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা। আর ১৩তম গ্রেডে শুরুতে একজন শিক্ষকের মূল বেতন হয় ১১ হাজার টাকা। এর সঙ্গে বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা যুক্ত হয়।
বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এগুলোতে মোট শিক্ষক আছেন পৌনে ৪ লাখের বেশি। শিক্ষকদের মধ্যে সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি। তবে বর্তমানে কর্মরত সহকারী শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন। ১৭ হাজার ৮টি পদ শূন্য।
জাতীয় বেতন স্কেলে ১০তম গ্রেডে শুরুর বেতন ১৬ হাজার টাকা। বেতন গ্রেড ১১তম হলে শুরুতে মূল বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা। আর ১৩তম গ্রেডে শুরুতে একজন শিক্ষকের মূল বেতন হয় ১১ হাজার টাকা। এর সঙ্গে বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা যুক্ত হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বীকৃতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও দপ্তরের সমমানের যোগ্যতার কর্মকর্তারা ১০ তম গ্রেডে বেতন পান। এ জন্য সহকারী শিক্ষকেরা দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের বেতন গ্রেড উন্নীত করার দাবি জানিয়ে আসছেন।
মন্ত্রণালয়ের লিখিত প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কাজের গুণগত ও পরিমাণগত দিক দিয়ে আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বাড়িয়ে ১০ তম করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা সম্মতি দিয়েছেন। তাই যৌক্তিকতা বিবেচনা করে সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীত করা প্রয়োজন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই মুহূর্তে কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১ তম করলে বছরে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ৮৩২ কোটি টাকা। ভবিষ্যতে শূন্য ১৭ হাজারের বেশি পদে শিক্ষক নিয়োগ করা হলে অতিরিক্ত আরও ৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো প্রয়োজন হবে। অবশ্যই এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।