আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে না : ব্যারিস্টার ফুয়াদ
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৫ PM , আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৮ PM
আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে না বলে মন্তব্য করেছেন ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, ইতিহাসের পরম্পরা বারবার প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে না, দলটি হচ্ছে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
আজ শুক্রবার (৭ই নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) কর্তৃক আয়োজিত বিপ্লব ও সংহতি দিবসে ‘জনতার নয়া রাজনীতির আকাঙ্ক্ষা: বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ইতিহাসের পরম্পরা বারবার প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে না, আওয়ামী লীগ হচ্ছে জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি। পশ্চিমা দেশগুলোতে যেখানে গণতন্ত্র কাজ করে সেই জায়গাতেও তারা রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে দেয় তারা প্রতিষ্ঠানকেও নিষিদ্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জন্ম হচ্ছে আজন্ম পাপ এবং আমাদের নিরাপত্তার হুমকি। ওর জন্ম কিন্তু পলাশী দিবসে, দেশবাসীকে তা জানতে হবে এবং এটি কাকতালি ও হইতে পারে। কিন্তু দিনশেষে ১৯৪৯ সালের ২৩ শে জুন পলাশী দিবসে তার জন্ম।
আরও পড়ুন : বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ফরিদপুর
আওয়ামীলীগের জন্মটাই হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য একটা প্রতিবন্ধকতা। যে শুধুমাত্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ক্ষতি করবে। এটাই তার ব্লাড ফ্লো। এটাই তার পলিটিক্যাল ডায়ালিসিস। এটাই যে কিডনি নষ্ট হলে ডায়ালিসিস করতে হয় না। দূষিত রক্তকে শোধন করে আবার পরিশুদ্ধ করে। আওয়ামী লীগের পলিটিক্যাল ডায়ালিসিসের প্রসেস হচ্ছে যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করে দিল্লির গোলামি কায়েম করবার মধ্য দিয়ে তার রাজনীতি।
অনুষ্ঠানে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমে বলেন, বিপ্লব ও সংহতি দিবস আমাদের শেখায় আমাদের শত্রু কারা এবং আমাদের মিত্র কারা? কিন্তু আমাদের শত্রু এবং মিত্রকে চিনতে ভুলে যাই। আমরা দেখতে পেয়েছি বিপ্লব সংহতি দিবসে বন্দিন সিপাহী জনতা একসাথে নেমে তারা স্লোগান দিয়েছিল নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার, দিল্লি না ঢাকা,, ঢাকা,, ঢাকা,, গোলামী না আজাদি,, আজাদি, আজাদি,, একইভাবে জুলাই বিপ্লবে আমরা দেখতে পেয়েছি খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের মুক্তিগামী ছাত্রজনতা সারাদেশে তারা একসাথে স্লোগান দিয়েছিল নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার তারা স্লোগান দিয়েছিল দিল্লি না ঢাকা গোলামী না আজাদি আজাদি আজাদি।
তিনি বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তারা কথা বলেছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এখান থেকে আমরা শিক্ষা নেই না। যে বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি শহীদরা যে জন্য জীবন দিয়েছে সে আকাঙ্ক্ষার কথাগুলো আমরা ভুলে যাই।
সাদিক কায়েমে বলেন, শহীদ জিয়ার অবদান আজকের এই বাংলাদেশ। তিনি দেখিয়েছে কিভাবে গণ মানুষের জন্য কাজ করতে হয়। কিভাবে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হয় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত অখন্ডতার রক্ষা করতে? কিভাবে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হয় কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আজকে শহীদ জিয়াকে যারা দানব আকারে হাজির করেছে শহীদ জিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে যারা ব্যঙ্গাত্ম করেছে তাকে মিলিটারি রোলার হিসেবে সাজিয়েছে তারাই আজকে বিএনপির বড় বড় বন্ধু সাজার চেষ্টা করছে। যারা বাংলাদেশে গুম, খুন, আয়নাঘর, শাহবাগ কায়েম করার মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল সম্ভাবনাকে নষ্ট করেছে সেই কালচারাল ফ্যাসিস্টরাই আজকে বিএনপির বড় বড় বুদ্ধিজীবী।
তিনি বলেন, বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ বিনিময় করার জন্য যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার আমাদের কাছে মনে হচ্ছে সে ঐক্য দিন দিন ভেঙ্গে যাচ্ছে। আমাদের ব্যক্তিগত, দলীয় ও বর্গীয় স্বার্থকে অনেক বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। ৫৪ বছর পরে যে ঐতিহাসিক সুযোগে এসেছে তা যেন হেলায়-দোলায় নষ্ট না করি। আমি আশা করব সে জায়গায় সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই যেভাবে রাজপথে নেমেছি। বিপ্লব পরবর্তী এই স্বপ্নের বাংলাদেশ শহীদদের আকাঙ্ক্ষার আলোকে বৈষম্য ইনসাফ ভিত্তিক বাংলাদেশ বির্নিমান করার জন্য এক সাথে কাজ করার আহ্বান করছি।
ডাকসুর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ঢাবির জসিমউদ্দিন হলের আহ্বায়ক তানভীর বারী হামীম বলেন, আজ ডাকসুর ভিপি, জিএস, এজিএস এবং অন্য নেতৃবৃন্দের দ্বৈত ভূমিকা রয়েছে— তারা যেমন ছাত্রনেতা এবং একই সঙ্গে একটি সংগঠনের নেতৃত্বের অংশ। তাই আমি তাদের অনুরোধ করব, আপনারা আপনাদের মুরব্বিদেরকে বোঝান যে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। জাতীয় স্বার্থে একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারলেই আমরা বাকি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারব।
তিনি বলেন, যেমন পরিবারে ছোটরা বড়দের কাছ থেকে শ্রদ্ধা ও পরামর্শ নেয়, তেমনি আজ আমাদেরও বড়দের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ৫ আগস্টের পূর্বে যেমন আমরা শাসনব্যবস্থার শক্তির সাথে এক ছিলাম, তেমনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পর ঐক্যবদ্ধভাবে একটি সুস্থ, সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জে. (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ও দলীয় মুখপাত্র মাহদী আমিন, লেখক ও ইসলামি ব্যাংক এর সাবেক এমডি আব্দুল মান্নান, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ছাত্রদলের পক্ষে শেখ তানভীর বারী হামিমসহ প্রমুখ।