‘এনসিপির প্রতি সবিনয় আবেদন, আমি হাফেজ মুনতাসির সমকামী নই, এটা পরিষ্কার করে বিবৃতি দেন’

মুনতাসির মাহমুদ ও  এনসিপি লোগো
মুনতাসির মাহমুদ ও এনসিপি লোগো   © সংগৃহীত ও সম্পাদিত

এনসিপির সহযোদ্ধা এবং নেতাদের প্রতি সবিনয় আবেদন করছি, আমি যে সমকামী মুনতাসির নই, বরং মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মুনতাসির মাহমুদ, এটা পরিস্কার করে একটা বিবৃতি দেন’-এভাবেই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দল থেকে সাময়িক অব্যাহতিপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সংগঠক মুনতাসির মাহমুদ দল থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতির পর মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি

আজ শনিবার ( নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা লিখেছেন মুনতাসির মাহমুদ গত গত ১২ অক্টোবর শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে পদ থেকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয় এরপর কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশের জবাব দেওয়া হলেও দলের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি

ফেসবুক পোস্টে মুনতাসির মাহমুদ লিখেছেন, ‘এনসিপির সহযোদ্ধা এবং নেতাদের প্রতি সবিনয় আবেদন করছি, আমি যে সমকামী বা গে মুনতাসির নই, বরং মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মুনতাসির মাহমুদ, এটা পরিস্কার করে একটা বিবৃতি দেন৷ আমার দলীয় পদ নাই, সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে আজ ১৯ দিন হলো আমি কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিয়েছি। কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করেনি, আহ্বায়ক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ নেতাদের বারবার কল করে, মেসেজ করে ন্যূনতম কোন সাড়া পাই নাই। দলে থাকা অবস্থাতেও বারবার বলেছি, এখন দলে পদ নাই, তাই বাধ্য হয়ে এভাবে লিখতে হলো

তিনি লিখেছেন, ‘এত অন্যায়, এত মিথ্যা অপবাদ সহ্য করা আমার পক্ষে সম্ভব না। আমাকে দল থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে অথচ মূল অপরাধীর বিরুদ্ধে বারবার শৃঙ্খলা কমিটিতে অভিযোগ দিয়ে কোন ন্যায়বিচার পাই নাই। এদিকে হলুদ সাংবাদিকরা আমার ছবি দিয়ে নিউজ করেছে বা কোন উপদেষ্টা চাপ দিয়ে করাচ্ছে যে, সমকামিতার অভিযোগে এনসিপি নেতা মুনতাসিরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মানুষ না বুঝে, না জেনে আমাকে গালি দিচ্ছে, আমার পরিবার পর্যন্ত টেনে আনতেছে। নিউজের লিংক সহ এনসিপির সর্বোচ্চ নেতাদের দেওয়ার পরেও তাদের কোন ভূমিকা নাই। যেন, আমি মরে গেলেই তারা খুশি! এনসিপির এই নেতাদের কি কোনো বিবেক নাই?

আমি দলে থাকতে সাধারণ সভা এবং বারবার আলাদা ভাবে বলেছি, এই বিষয়টা পরিস্কার করে বিবৃতি দেনউল্লেখ করে মুনতাসির লিখেছেন, ‘কিন্ত তাদের এতই সংকীর্ণতা যে, মুনতাসির মাহমুদের নামে বিবৃতি দিলে তো তার নাম আরও ছড়িয়ে যাবে। সে কাজ করুক, দাসের মত খাটুক, কিন্ত তার কাজের প্রচার করলে তো মুনতাসির উঠে যাবে। সুতরাং, কোনভাবেই মুনতাসিরের নামে কোন বিবৃতি দেওয়া যাবে না, প্রচার করা যাবে বা। বরং আওয়ামী লীগ থেকে আসা লোকদের প্রমোট করে কৃত্রিমভাবে নেতা বানাতে হবে

তিনি লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এনসিপির তৃণমূলের সহযোদ্ধারা আমার সাথে আছে৷ প্রতিদিন সারাদেশ থেকে আমি ৪০ এর বেশি কল রিসিভ করি, তারা ভালোবাসা জানায়, কিন্ত দুঃখ-কষ্ট প্রকাশ্যে বলতে পারে না। নেতাদের জুলাই বিক্রি করা নিয়ে তাদের ক্ষোভের শেষ নাই!

এনসিপি তার তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাসের চেয়েও খারাপ ভাবে ট্রিট করে৷ কোনো সমর্থন দেয় না, শুধু খাটিয়ে নিতে চায়। পরিশ্রম করে গুছানো জায়গা আবার নিজেদের পছন্দের লোক বসিয়ে ধ্বংস করে৷ সংকীর্ণতার স্তর এত নীচে যে, নেতাকর্মীদের উপর হামলা হলে সেই হামলার খবর এবং প্রতিবাদ মিছিল এনসিপির কেন্দ্রীয় পেইজে দিবে কি না, দিলে সেই ত্যাগী নেতারা বেশি পরিচিত হয়ে যায় কি না, এই ধরণের অপরাজনীতিও করে

এই নষ্টদের দখল থেকে এনসিপিকে উদ্ধার করতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি জুলাই গাদ্দারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলাম, আমার সে লড়াই চলবে৷ তৃণমূলের প্রতিটা নেতাকর্মী জানে, আমার বলা প্রতিটা লাইন ধ্রুব সত্য। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল সম্ভাবনাকে এই নষ্টরা ধ্বংস করেছে, দায় নিতে হচ্ছে তৃণমূলকে আর ক্ষমতা আর দুর্নীতির মজা নিচ্ছে উপরে বসে থাকা জুলাই গাদ্দারগুলো। এরাই জুলাইয়ের শক্তিগুলোতে বিভেদ ও ভাঙন লাগিয়েছে আপ বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ ইত্যাদি ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত করে ঘৃণার আগুন জ্বালিয়েছে, শুধুমাত্র নিজেদের অপকর্ম এবং দুর্নীতি ঢাকতে। আমি মুনতাসির মাহমুদ, সারাজীবন সৎ ভাবে জীবন যাপন করেছি, তারচেয়েও সৎ ভাবে রাজনীতি করেছি, আমার মূল্যায়ন বাংলাদেশের মানুষ করবে

মুনতাসির মাহমুদ লিখেছেন, ‘যারা আমাকে চিনেন, ভালোবাসেন অথবা বাসেন না, কিন্ত জানেন আমার প্রতি অন্যায় হয়েছে, তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ এই সীমাহীন অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন নিজ নিজ জায়গা থেকে। আমি যে গে বা সমকামী মুনতাসির না, আমি যে হাফেজ মুনতাসির মাহমুদ, আল্লাহর ওয়াস্তে মানুষকে এটা জানিয়ে দিন। পোস্টটা শেয়ার করুন বা নিজেরা লিখুন৷ এমন জঘন্য মিথ্যা অপবাদ সহ্য করার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো

মুনতাসির মাহমুদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ছিলেন তিনি চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (আইআইইউসি) নয়াদিল্লির সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী


সর্বশেষ সংবাদ