আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয়, ফ্যাসিস্ট সংগঠন: হাসনাত আবদুল্লাহ

সমন্বয় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন হাসনাত আবদুল্লাহ
সমন্বয় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন হাসনাত আবদুল্লাহ  © টিডিসি

জাতীয় নাগরিক পার্টিরি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন। তাদের যদি জনগণের সমর্থন থাকত, তাহলে পালিয়ে যেতে হতো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করতে হতো না। ডামি নির্বাচন আয়োজন করতেও হতো না।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ঝালকাঠি শহরের ফাতেমা কনভারসেশন হলে অনুষ্ঠিত জেলা সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝালকাঠি জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মাইনুল ইসলাম মান্না।

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শাসনের সময় ছাত্রশিবির, বিএনপি বা ছাত্রদলের কেউ গুম-খুন হলে সেটাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। অনেক সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক কর্মী অতীতে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিলেন। তারা তখন মানবতার কথা বলেননি।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংস্কারের পক্ষে থাকা রাজনৈতিক শক্তিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে মন্তব্য করে হাসনাত বলেন, ‘আমরা মনে করি, আগামী সংসদে যারা সংস্কারের পক্ষে থাকবে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে। সেই জায়গা থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সংস্কারের শক্তির পক্ষে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করব।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলছে তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি না। সচিবালয়ে ডিসি, এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড পর্যন্ত ভাগাভাগি চলছে। বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসনকে নিজেদের অনুকূলে নিতে ব্যস্ত। নির্বাচন কমিশনও নিরপেক্ষ নয়—তাদের কাজের কোনো নীতিমালা নেই।’

আরও পড়ুন: দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসে নিউজের পর মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রলীগের বাঁধন গ্রেপ্তার

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা জেনেছি, নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় দেড় কোটি মৃত ভোটারের নাম রয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনগুলোতে কবর থেকে উঠে এসে ভোট দিয়েছে—এমন খবরও আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখেছি। রাজনৈতিক দলগুলো যদি একসাথে না আসে এবং ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন একধরনের ব্যক্তি, ইচ্ছা সিদ্ধান্ত নেয়। কোনো ব্যক্তির ইচ্ছা নয়, নীতির মাধ্যমে চলতে হবে ইসিকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্তবর্তী কালীন সরকারকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের জনগণ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভোটের অপেক্ষায় রয়েছে। নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হতে পারে সেটার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে।’

ভোট নিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা ভোট চাইব, সেসব নাগরিকের কাছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, যারা অপরাধে জড়িত নয়, গুম-খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোকেই একসাথে কাজ করতে হবে।’

আরও পড়ুন: ডা. জাকির নায়েক ঢাকায় পা রাখতেই ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার আশা নয়াদিল্লির

তিনি বলেন, ‘এনসিপি যে অবস্থানে আছে, রাষ্ট্র বিনির্মাণে সবাইকে সেই চিন্তা-ভাবনায় আসতে হবে। আগামীর নির্বাচনে প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখে, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফল হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একটি আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম সদস্যসচিব মশিউর রহমান ও মাহমুদা মিতু, মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরিশাল জেলার প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাঈদ মূসা। 

সভায় জেলার চার উপজেলার এনসিপি নেতারা অংশগ্রহণ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ