গাইবান্ধায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে উত্তেজনা ১৪৪ ধারা জারি
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪৫ AM , আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪৮ AM
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সদরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলীয় দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্ভাব্য সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বুধবার সকাল ছয়টা থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত পৌর এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) মাঝ রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সম্ভাব্য অবনতি এবং জনস্বার্থ ও সম্পদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন পূর্ণ সতর্কতায় রয়েছে।
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, সম্ভাব্য ঝুঁকি বিবেচনায় রাত থেকেই এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক তৎপরতা রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারি করছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার উপজেলা দলীয় কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব। কিন্তু দলেরই আরেকটি অংশ একই সময়ে এবং একই স্থানে আলাদা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। দ্বিতীয় দলটি মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়ার হুমকি দিলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট সুন্দরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় জেলা বিএনপি। কিন্তু কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অন্য দলের চিহ্নিত কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে।
এই অনিয়মের প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ দলীয় কর্মীরা গত ২৭ এবং ৩১ আগস্ট বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। তাদের বিক্ষোভ, ঝাড়ু মিছিল ও মোটরসাইকেল শোডাউনের মধ্য দিয়ে তারা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিকের অপসারণ দাবি করেন। তাদের দাবি, মাত্র দুই ঘণ্টার এক প্রহসনমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমিটি গঠন করে দলের দীর্ঘদিনের নিষ্ঠাবান নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, জেলা সভাপতি সাদিকের পক্ষে জোরালো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে একদল নেতা-কর্মী পাল্টা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।