টিসিবি-ভিজিডি কার্ড বাণিজ্যের বিরুদ্ধে জামায়াতের মানববন্ধনে বিএনপি সভাপতির নেতৃত্বে হামলা

জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপির হামলা
জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপির হামলা  © সংগৃহীত

রাজশাহীর বাঘায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে জামায়াতের ৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানায় দলটি। আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে বাঘার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও ভিজিডিং কার্ড বাণিজ্যের প্রতিবাদে জামায়াতের আয়োজনে মানববন্ধন হচ্ছিল। এসময় বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমের নেতৃত্বে বিএনপি কর্মীরা মিছিল নিয়ে সেখানে এসে জামায়াত নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। এর এক পর্যায়ে শুরু হয় মারধর। এতে জামায়াতের ৪ জন আহত হন। এর মধ্যে আব্দুর রহমান ও শামীম নামের দুইজন জামায়াত কর্মী বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি রয়েছেন।

বাউসা ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা মজিবার রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করছিলাম। আমি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলাম, তখন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আহ্বায়কের নেতৃত্বে হঠাৎ করে বিএনপির লোকজন পেছন থেকে ‘জিয়ার সৈনিক’ বলে স্লোগান দেওয়া শুরু করে। তাদের উত্তেজিত অবস্থান দেখে আমরা স্থান ত্যাগ করে বাজারের দিকে এগিয়ে যাই। কিন্তু তারাও আমাদের পিছু নিয়ে হট্টগোল শুরু করে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন তাদের উশৃঙ্খল আচরণ দেখে সরে যেতে চাই, তখনই তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হামলায় আব্দুর রহমান (২২), সৌরভ আলী (২০), আবু তাহের (৩৩) ও হোসেন আলী (৩৪) নামে চার জামায়াত কর্মী আহত হন বলে দাবি করেন মজিবর রহমান।

বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে গিয়ে দেখি জামায়াতের লোকজন মাইক নিয়ে মানবন্ধন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের মানববন্ধন করতে নিষেধ করলেও শোনেনি। আমরা তাদেরকে বলেছি বসে সমাধান করতে। তারা তা করতে রাজি না হয়ে ওল্টা আমাদের সৌরভ নামের একটা ছেলে হামলা করে পরে আমাদের ছেলেরা তাকে চড়-থাপ্পর দেয়। এ নিয়ে জনগণ মানববন্ধনের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিবাদ বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উভয়ের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটে।

অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সবেমাত্র দায়িত্ব পেয়েছি গত ফেব্রুয়ারিতে। এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য নয়। আমি চাইলেই একা সবকিছু ভাগ-বণ্টন করতে পারব না। সবাইকে নিয়েই বণ্টন করতে হয় এবং আমি সেটাই করেছি। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় কোনো পক্ষের কেউ আহত হয়নি। জামায়াতের নেতাকর্মীদের আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবরও সত্য নয় বলে তিনি জানান।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. ফ. ম. আছাদুজ্জামান বলেন, মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। তবে বড় ধরনের কোনো মারামারির প্রমাণ পাইনি। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।


সর্বশেষ সংবাদ