‘এই রাষ্ট্র ভেঙে দাও’—— ছাত্র ফ্রন্ট নেতার মন্তব্য ঘিরে জবিতে সমালোচনা

ফেসবুক পোস্ট ও ইভান তাহসীব
ফেসবুক পোস্ট ও ইভান তাহসীব  © টিডিসি সম্পাদিত

শাহবাগে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্লাটফর্ম সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষের দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইভান তাহসীব। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘নিপীড়নের বিচার চাইতে এসে রাষ্ট্রের হাতে নিপীড়িত! এই রাষ্ট্র ভেঙে দাও!’    

তার এই পোস্টকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কেউ কেউ এটিকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী উসকানি’ হিসেবে দেখছেন। আবার কেউ একে নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা। আবার কেউ মনে করছেন এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার। 

জবির সাবেক শিক্ষার্থী জাহিদ সাদেক বলেন, ‘বাম সংগঠনের কাছ থেকে বাংলাদেশ কোনোদিন উপকৃত হয়নি। আজকে মব জাস্টিস তাদেরই আবিষ্কার। তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিচারবহির্ভূত হত্যা, বিচার না চেয়ে ফাঁসি চাওয়ার মব শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তথাকথিত এক বাম নেতা মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এই রাষ্ট্রকে ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।’

আরো পড়ুন: ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলা, মেঘমল্লার বসুসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

তিনি আরো বলেন, ‘এর মাধ্যমে তারা মূলত ‘লাল সন্ত্রাসকে বৈধ’ এবং ‘রাষ্ট্রযন্ত্রকে অকার্যকর’ করে শাহবাগের মাধ্যমে আরেকটি ছায়া সরকার গঠন করতে চায়। যা আমরা ২০১৩ সালে প্রত্যক্ষ করেছি। তার এই রাষ্ট্রকে ভেঙে দেওয়ার অর্থ দাঁড়ায় রাষ্ট্রকে ব্যর্থ করে ‘লাল সন্ত্রাসকে’ বৈধতা দেওয়া।’

এ বিষয়ে জবি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জুনায়েত মাসুদ বলেন, ‘বাকস্বাধীনতা মানুষের অধিকার। প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে সে হয়তো এভেবে বলেছে। তবে বাকস্বাধীনতার অধিকার চর্চার বিষয়ে আমাদের আরও সতর্ক থাকা উচিত।’

জবি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘যারা এই রাষ্ট্রকে ভেঙ্গে দিতে চায় বা এরূপ কথা বলে, তারা রাষ্ট্রদ্রোহী। এরূপ উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন নমনীয় হওয়ার কোন সুযোগ নেই। এই সকল উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জবি শাখার সদস্য সচিব সিফাত হাসান সাকিব বলেন, ‘অতি আবেগি হয়ে কথা বলা অনুচিত। ৫ আগস্ট পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ফসল। ৫ আগস্টের পর থেকে এখনও সরকার স্থিতিশীল পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। চারিদিকে পতিত ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র জাল বেছানো। মানুষের অধিকার নিয়ে আমরা কথা বলবো, সরকারের কোন ভুল হলে সেটা ধরিয়ে দেব। কিন্তু অতি আবেগি হয়ে এমন কোন কথা বলবো না যেটা থেকে ফ্যাসিস্টরা সুবিধা নেয়।’ 

ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখার সভাপতি ইভান তাহসীব বলেন, ‘যেই সমাজকাঠামো এইরকম ধর্ষক তৈরি করে, যেই সমাজকাঠামো ধর্ষকের বিচার করে না, যেই সমাজকাঠামো নারী নিপীড়নের জাযগাটাকে পাকাপোক্ত করে, সেই সমাজকাঠামোর প্রতি ঘৃণা দেখিয়ে এই কথাটা বলা। পুলিশ রাষ্ট্রের একটি পার্ট। পুলিশের ধর্ষকদের ধরার ক্ষেত্রে যতটা তৎপরতা তাদের চেয়ে বেশি তৎপরতা আন্দোলন দমানোর তৎপরতা।’

ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই উপদেষ্টা দপ্তরে জানানো হয়েছিলো এবং একটা টিম সেখানে যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আমাদের বাঁধা দেওয়া হয়। আমাদের মিছিলে নারী আন্দোলনকারী বেশি ছিলো কিন্তু সেখানে শুরুতে সেখানে কোনো নারী পুলিশ রাখেনি। পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডা চলাকালীন পুলিশ আমাদের ঠেলতে শুরু করে আর আমাদের নারী আন্দোলনকারীরা নিচে পড়ে গিয়ে আহত হন।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence