মাশরাফি: একজন যোদ্ধা, একজন নেতা

নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজা
নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজা

আচ্ছা, মাশরাফি আর কত বছর খেলবেন? সম্ভবত সামনের বিশ্বকাপ পর্যন্তই? তারপর কোথায় পাব অনুপ্রেরণাদায়ী এমন ক্রিকেটার? উত্তরটা পরে খোঁজা যাবে। আপাতত জানা যাক, আজ ৫ অক্টোবর, বাংলাদেশ ক্রিকেট অধিনায়কের জন্মদিন। শুভ জন্মদিন ম্যাশ—

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নড়াইল এক্সপ্রেস মাশরাফি বিন মর্তুজার ৩৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। লড়াকু এই ক্রিকেটার ৩৬ বছরে পা রাখলেন আজ। ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম ‘পেস বোলার’ হিসেবে খ্যাতি তার।

আচ্ছা, মাশরাফি বিন মর্তুজার মত ভালোবাসা, শ্রদ্ধা বাংলাদেশের আর কোনো খেলোয়াড় কখনও পেয়েছেন কিনা সন্দেহ আছে। কেউ কি আশা করেন তিনি সেঞ্চুরি করবেন? না। আশা করেন মাশরাফি নিয়মিত ৫ উইকেট নেবেন? মনে হয় সেটাও না; কারণ, বারবার ইনজুরির কারণে মাশরাফি বাধ্য হয়েছেন উইকেট নেবার বদলে সঠিক লাইনে বল করে রান আটকে ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলতে, যাতে অন্য বোলাররা উইকেট পায়। নিজের পেস বিসর্জন দিতে হয়েছে ইনজুরির জন্য। একসময় নতুন বলে বাংলাদেশের একমাত্র ভরসা ছিলেন মাশরাফি, মুস্তাফিজ আসার পর নতুন বলটা তুলে দিয়েছিলেন ফিজের হাতে। সাম্প্রতিক সময়ে রুবেল, তাসকিনরা কিছুটা বিবর্ণ; তাই আবার নতুন বল তুলে নিচ্ছেন হাতে। এটাকেই বুঝি বলে ‘ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দা ফ্রন্ট’। হেটার্সরা কত কথা বলে, ক্যাপ্টেন কোটায় খেলেন, এই সেই... অমুক তমুক... পরিসংখ্যান কিন্তু বলে গত বিশ্বকাপের পর থেকে মাশরাফিই দেশের সেরা পেসার।

মাশরাফি বাংলাদেশের প্রথম স্পিডস্টার, একটা প্রকৃতি প্রদত্ত উপহার বাংলাদেশের জন্য। প্রথম যখন দলে আসেন প্রচণ্ড গতি ছিল বলে। সম্ভবত মাশরাফিই বাংলাদেশে পেস বোলিংয়ের একটা স্ট্যান্ডার্ড বা ক্রেজ তৈরি করেছিলেন, যার ফলে তাকে দেখেই কিশোররা পেসার হতে চেয়েছে। অবশ্যই মাশরাফির আগেও আমাদের দেশে ভালো মানের পেসার ছিলেন, যেমন- শান্ত, প্রিন্স, আনিসুর রহমান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। তবে সে-সময় ক্রিকেটের ওপর এত আগ্রহ ছিল না মানুষের।

জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে মাশরাফির ইনজুরি

আজকে ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, কোনোদিন ডিসিপ্লিন ভাঙার অভিযোগ উঠে নাই, একটা বিতর্ক হয়নি তাকে নিয়ে। মাশরাফির তুলনা কেবল মাশরাফি নিজেই। প্রতিবার মাঠে নামার সময় মাঠের ভেতর ডান পা আগে দিয়ে মাটিতে সালাম করে আকাশের দিকে তাকিয়ে যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, অন্যরকম এক আবেগ ছুঁয়ে যায় সবাইকে। তার বক্তব্য— ক্রিকেট রুটি-রুজি, তাই সালাম করি মাঠ, আর আকাশের দিকে তাকাই আল্লাহর নাম নিয়ে তাকে স্মরণ করে।

মাঠের ভেতর এবং মাঠের বাইরে এমন শ্রদ্ধাভাজন ক্রিকেটার এদেশে আর আসেনি। মাশরাফি হাঁটলেই মানুষ খুশি, সিঙ্গেল নিলেই খুশি, বল ধরলেই খুশি। আর কিছু না করলেও, শুধু মাঠে থাকলেই মানুষ খুশি। আমার অনেকদিন আগে থেকেই মনে হয় মাশরাফি ক্রিকেটের সীমানা ছাড়িয়ে দেশ এবং রাষ্ট্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষে পরিণত হয়েছেন। মাশরাফি একটা কথা বললে, কোনো বিষয়ে মন্তব্য করলে সেটা মানুষের ওপর ভালোভাবেই প্রভাব ফেলে। জীবনের যে কোনো পর্যায়ে সংগ্রামরত মানুষের জন্য মাশরাফি একটা প্রেরণা।

ব্যক্তিজীবনে মাশরাফি
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম বোলিং স্তম্ভ ও একদিনের আন্তর্জাতিকে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। তার ডাক নাম ‘কৌশিক’। তিনি একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার বোলিংয়ের ধরন ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলার। বাংলাদেশ জাতীয় দল ছাড়াও তিনি এশিয়া একাদশের একদিনের আন্তর্জাতিক দলে খেলেছেন।

সন্তান-মেয়ে হুমায়রা মর্তুজা এবং ছেলে সাহেল মর্তুজার সঙ্গে ক্রিকেট যোদ্ধা

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা নড়াইলে মাশরাফির জন্ম। ছোটবেলা থেকেই তিনি বাঁধাধরা পড়াশোনার পরিবর্তে ফুটবল আর ব্যাডমিন্টন খেলতেই বেশি পছন্দ করতেন, আর মাঝে মধ্যে চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটা। তারুণ্যের শুরুতে ক্রিকেটের প্রতি তার আগ্রহ জন্মে, বিশেষত ব্যাটিংয়ে; যদিও এখন বোলার হিসেবেই তিনি বেশি খ্যাত, যে জন্য তাকে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামেও অভিহিত করা হয়।

বাইকপ্রিয় মর্তুজাকে সবাই খুব হাসিখুশি আর উদারচেতা মানুষ হিসেবেই জানে। প্রায়শই তিনি বাইক নিয়ে স্থানীয় ব্রিজের এপার-ওপার চক্কর মেরে আসেন। নিজের শহরে তিনি প্রচণ্ড রকমের জনপ্রিয়। এখানে তাকে ‘প্রিন্স অব হার্টস’ বলা হয়। জানা যায়, মাশরাফির শিক্ষাজীবন শুরু নড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ২০০৩ সালে। এরপর দর্শন শাস্ত্রে অনার্স কোর্সে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভিক্টোরিযা কলেজে পড়ার সময় সুমনা হক সুমির সঙ্গে তার পরিচয়, এরপর ২০০৬ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। মাশরাফি ও সুমি দম্পতির ঘরে রয়েছে দুটি সন্তান-মেয়ে হুমায়রা মর্তুজা এবং ছেলে সাহেল মর্তুজা।

ক্যারিয়ার
প্রাথমিক ক্যারিয়ার : মর্তুজা বাংলাদেশের সফলতম পেস বোলারদের একজন। আক্রমণাত্মক, গতিময় বোলিং দিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকতেই তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সাবেক ফাস্ট বোলার অ্যান্ডি রবার্টসের নজর কেড়েছিলেন, যিনি কি না তখন দলটির অস্থায়ী বোলিং কোচের দায়িত্বে ছিলেন। রবার্টসের পরামর্শে মাশরাফিকে বাংলাদেশ এ-দলে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ এ-দলের হয়ে একটিমাত্র ম্যাচ খেলেই মাশরাফি জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পান। ৮ নভেম্বর, ২০০১ এ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে তার অভিষেক ঘটে। একই ম্যাচে খালেদ মাহমুদেরও অভিষেক হয়। বৃষ্টির বাগড়ায় ম্যাচটি অমীমাংসিত থেকে যায়। মাশরাফি অবশ্য অভিষেকেই তার জাত চিনিয়ে দেন ১০৬ রানে ৪টি উইকেট নিয়ে। গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার ছিলেন তার প্রথম শিকার। মজার ব্যাপার হলো, মাশরাফির প্রথম ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচও ছিল এটি। তিনি এই বিরল কৃতিত্বের অধিকারী ৩১তম খেলোয়াড় এবং ১৮৯৯ সালের পর তৃতীয়। একই বছর ২৩ নভেম্বর ওয়ানডে ক্রিকেটে মাশরাফির অভিষেক হয় ফাহিম মুনতাসির ও তুষার ইমরানের সাথে। অভিষেক ম্যাচে মোহাম্মদ শরীফের সাথে বোলিং ওপেন করে তিনি ৮ ওভার ২ বলে ২৬ রান দিয়ে বাগিয়ে নেন ২টি উইকেট।

মাঠে এবং মাঠের বাইরে তাঁর নিপুণ পরিচালনায় গড়ে উঠেছে দুর্দান্ত এক অপরাজেয় শক্তি

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যক্তিগত তৃতীয় টেস্ট খেলার সময় তিনি হাঁটুতে আঘাত পান। ফলে তিনি প্রায় দু-বছর ক্রিকেটের বাইরে থাকতে বাধ্য হন। ইংল্যন্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট খেলায় তিনি সফলতা পান। ৬০ রানে ৪ উইকেট নেয়ার পর আবার তিনি হাঁটুতে আঘাত পান। এ যাত্রায় তিনি প্রায় বছরখানেক মাঠের বাইরে থাকতে বাধ্য হন।
২০০৪ সালে ভারতের বিরুদ্ধে খেলার সময় রাহুল দ্রাবিড়কে অফ-স্ট্যাম্পের বাইরের একটি বলে আউট করে তিনি স্বরূপে ফেরার ঘোষণা দেন। সেই সিরিজে তিনি ধারাবাহিকভাবে বোলিং করেন এবং টেন্ডুলকর ও গাঙ্গুলিকে আউট করার সুযোগ তৈরি করেন। তবে ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় তিনি উইকেট পাননি। এই সিরিজের একটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে অবিস্মরণীয় জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি।

২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তিনি ভালো বল করেন। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তার গড় ছিল সবচেয়ে ভালো। কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নাটকীয় জয়ে তিনি অবদান রাখেন। তিনি মারকুটে ব্যাটসম্যান অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে শূন্য রানে আউট করেন এবং ১০ ওভারে মাত্র ৩৩ রান দেন।
ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে ভালো পেস বোলারের ঘাটতি ছিল। বাংলাদেশে মোহাম্মদ রফিকের মতো আন্তর্জাতিক মানের স্পিনার থাকলেও উল্লেখযোগ্য কোনো পেস বোলার ছিল না। মাশরাফি বাংলাদেশের সেই শূন্যস্থান পূরণ করেন।
২০০৬ ক্রিকেট পঞ্জিকাবর্ষে মাশরাফি ছিলেন একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় বিশ্বের সর্বাধিক উইকেট শিকারি। তিনি এ-সময় ৪৯টি উইকেট নিয়েছেন।
২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় জয়ে মর্তুজা ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ৩৮ রানে ৪ উইকেট দখল করেন। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি খেলায় নিউজিল্যান্ডের সাথে বিজয়েও মাশরাফির ভূমিকা রয়েছে। মাশরাফি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গতির বোলার এবং সমর্থকদের কাছে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামে পরিচিত।
মাশরাফি একজন মারকুটে ব্যাটসম্যান। ভারতের বিপক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় তিনি পরপর ৪ বলে ছক্কা পেটান। সেই ওভার থেকে তিনি ২৬ রান সংগ্রহ করেন, যা কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের জন্য এক ওভারে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
১৭ বছরের ক্যারিয়ারে ১১ বার চোটের কারণে দলের বাইরে যেতে হয়েছে মাশরাফিকে। চোটই তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল ২০১১ সালের দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। ২০১৬ সালের রকেট বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় খেলায় ২ উইকেট সংগ্রহের মাধ্যমে মোট ২১৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি হিসেবে তুলে ধরেন নিজেকে।

মাত্র ১১ বছর বয়সের মাশরাফিকে নড়াইল ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দেওয়া হয় 


২০১৭ সালে ৬ এপ্রিল বাংলাদেশ বনাম শ্রীলংকা সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি দিয়ে উনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা থেকে অবসর নেন। মাঠে ম্যাশ নামে পরিচিত মাশরাফি বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার যে অধিনায়ক থাকা অবস্থায় অবসর নেয়।

ক্যারিয়ার মাইলফলক
টেস্ট অভিষেক : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, ২০০১।
একদিনের আন্তর্জাতিক : অভিষেক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, ২০০১। ২০০৬ সালে নাইরোবিতে কেনিয়ার বিরুদ্ধে মাশরাফি ২৬ রানে ৬ উইকেট নেন, যা তার সেরা সাফল্য।

অধিনায়কের দায়িত্ব
২০০৯ সালের শুরুতে মাশরাফি অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের সহকারী ছিলেন। পরবর্তীতে ওই বছরেরই জুন মাসে তিনি মোহাম্মদ আশরাফুলের স্থলাভিষিক্ত হন এবং তার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পান সাকিব আল হাসান। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে নিজের প্রথম ম্যাচেই তিনি হাঁটুতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ঐ খেলায় বাংলাদেশ জয়লাভ করে; কিন্তু মাশরাফি এই চোটের কারণে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাঠের বাইরে ছিলেন। উক্ত ম্যাচসহ পরবর্তীকালে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেন সাকিব আল হাসান। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের সাথে হোম সিরিজে তিনি পুনরায় অধিনায়কত্ব পান। তবে এবার তিনি শুধু একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য দায়িত্ব পান এবং এবারও তার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পান সাকিব আল হাসান। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপেও তিনি বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তুলনায় কতটা এগিয়ে মাশরাফি
১৯৮৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব করেছেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন। তার সময়েই বাংলাদেশ ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি জয় পেয়েছিল। তাই তাকে বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়কও বলা হয়।
কিন্তু আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের মধ্যদিয়ে হাবিবুল বাশারের চেয়ে কম ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জয়ের দিক দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে গেলেন ক্যাপ্টেন কুল। সেটা যেমন মোট জয়ের দিক দিয়ে, তেমনি জয়ের শতকরা হারের দিক দিয়েও। তার অধিনায়কত্বে গত আড়াই বছর ধরে অন্য দল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। ধরা দিয়েছে একের পর এক মনে রাখার মতো সাফল্য। অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। এবার অনন্য এক সাফল্যে উদ্ভাসিত হলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।

ক্রিকেটের বাইরের জীবনটাও বেশ ছন্দময় ম্যাশের

দেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে জয় এনে দিয়ে নতুন মাইলফলক গড়লেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি জয় এনে দেওয়া অধিনায়ক এখন তিনিই। ৫৩টি ওয়ানডে ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে ৩০টি জয় এনে দেন মাশরাফি। হার ২১টিতে। ফল হয়নি দুটি ম্যাচে। জয়ের হার ৫৮.৮২।
এতদিন এই রেকর্ডটা ছিল সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের দখলে। বাশার ৬৯ ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে ২৯টি ম্যাচে দলকে জিতিয়েছিলেন। জয়ের শতকরা হার ৪২.০২।
বাশারের নেতৃত্বে ৪০টি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তবে মাশরাফির নেতৃত্বে ২১টি ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। তার মানে এখানেও বাশারের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছেন মাশরাফি। বাশার-মাশরাফির পর বাংলাদেশকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৩টি ওয়ানডেতে জয়ের স্বাদ দিয়েছেন ৫০টি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া সাকিব আল হাসান। আর হেরেছে ২৬ ম্যাচে। ফল হয়নি একটি ম্যাচে। সাকিব অবশ্য জয়ের হারের দিক দিয়ে হাবিবুল বাশার সুমনকে পেছনে ফেলেছেন। সাকিবের জয়ের হার ছিল ৪৬.৯৩।

মাশরাফি যখন বিয়ে করছিলেন

 

মোহাম্মদ আশরাফুল বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৩৮ ম্যাচে। যেখানে বাংলাদেশ জিতেছে ৮টিতে। হেরেছে ৩০টিতে। মুশফিকুর রহিম নেতৃত্ব দিয়েছেন ৩৭ ম্যাচে। জয় ১১টিতে। হার ২৪টিতে। ফল হয়নি দুটি ম্যাচে। খালেদ মাসুদ পাইলট ৩০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জয় এনে দিয়েছিলেন ৪টিতে। হার ২৪টিতে। ফল হয়নি দুটি ম্যাচে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence